অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারে সুশৃঙ্খলভাবে বাণিজ্য মেলা হবে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যে যাই বলুক ২৩তম বাণিজ্য মেলায় গত বছরের চেয়ে বিদেশিদের অংশগ্রহণ ও স্টলের সংখ্যা বাড়ছে। তাই বাণিজ্য মেলায় রফতানি আদেশও বাড়বে। রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মেলা প্রঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার (১ জানুয়ারি) সকাল দশটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ মেলার উদ্বোধন করবেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ উদ্যোগে মাসব্যাপী এ মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। টিকিটের মূল্য হবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৩০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা।
নির্বাচনের ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্ষমতাসীন দলের অধীনে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন হয়। বাংলাদেশেও তা হবে। তাই আশা করছি বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। তারা অতীতের মতো আর ভুল করবে না। যদি ভুল করে তাহলে তাদের জন্য কোনো নির্বাচন ঠেকে থাকবে না। নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সাল হলো নির্বাচনের বছর। আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে। আর নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। ইসি যে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে সেটা তারা প্রমাণ করেছে কুমিল্লা ও রংপুর সিটি নির্বাচন করে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই মেলার রফতানি আদেশ বাড়ে। গত বছর রফতানি আদেশ এসেছিল ২৬০ কোটি টাকা। এবার সেটা আরো বাড়বে বলে আশা করা যায়। কারণ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা সুশৃঙ্খল হবে। এবারে ১০০টি সিসি ক্যামেরা থাকবে প্রয়োজনে আরো বাড়ানো হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে। মেলার দর্শনার্থীদের চলাচলের সুবিধার জন্য মেলার অভ্যন্তরের রাস্তাগুলোতে বেশি জায়গা রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিবারই বছরের শুরুতে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার আয়োজন করি। এ বাণিজ্য মেলা শুধু ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারেরই কাজ করে না এটা একটা বিনোদনের কেন্দ্রেও পরিণিত হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে বাণিজ্য মেলার কাজ শুরু হয়েছে। জমির সমস্যার কারণে ২০১৯ সালে হবার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। হবে ২০২০ সাল থেকে।
এবার বাণিজ্য মেলার প্রধান প্রবেশদ্বার পদ্মা সেতুর আদলে করার ব্যাপোরে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হচ্ছে- সারা বিশ্বের কাছে চ্যালেঞ্জ। যা নতুন অধ্যায়ের সূচনা। বাংলাদেশের জন্য এটা স্বর্ণালী যুগ। কারণ বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে সরে গেলেও প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে এটি বাস্তবায়ন করছেন। এটি বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হবে, চেহারে পাল্টে যাবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মেলায় মোট ৫৮৯টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্যাভেলিয়ন ও মিনি প্যাভেলিয়ন ১৮৯টি এবং স্টল ৪শ’টি। মেলায় ১৭টি দেশের ৪৩টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেবে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মরিশাস এবং দক্ষিণ কোরিয়া। এবারে বিদেশিদের অংশ গ্রহণ ও স্টলের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে বাড়বে। মেলায় বিদেশি অংশগ্রহণকারী হিসেবে ১৭টি দেশের ৪৩টি প্রতিষ্ঠান থাকছে।
বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, মেলার স্টল বরাদ্দে কোনো অনিয়ম হয়নি। আর খাবারের স্টলগুলোর ব্যাপারে এবার আমরা সতর্ক। প্রতিটি খাবারের দাম নির্ধারণ করা থাকবে। এমনকি সালাদের দাম নিলেও সেটার মূল্য দৃশ্যমানভাবে লেখা থাকতে হবে।
ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য জানান, মেলায় এবার স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৫৮৯টি। এবারের মেলায় থাকছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, ফ্ল্যাওয়ার গার্ডেন, ই-শপ, শিশু পার্ক, প্রাইমারি হেলথ সেন্টার, মা ও শিশু কেন্দ্র, রক্তসংগ্রহ কেন্দ্রসহ ৩২ ধরনের অবকাঠামো থাকছে।