বিজিবির হেলিমিশনে প্রাণ ফিরে পেল বন্যায় ডুবে যাওয়া শিশু নাজমুল

Picsart_24-08-25_09-20-15-250.jpg

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

বিজিবির হেলিমিশনে প্রাণ ফিরে পেল বন্যায় ডুবে যাওয়া শিশু নাজমুল।

২৪ জুলাই, ২০২৪। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। ফেনীর পরশুরাম এলাকা এখন জলে ডুবে গেছে। বন্যার তীব্রতা যেন কিছুতেই কমছে না। বাতাসে বয়ে আসা অসহায় মানুষের চিৎকার, তাদের জীবনের জন্য আকুতি—এই সবকিছু মিলে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যেই ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বিজিবির হেলিকপ্টার নামছে ফেনীর পরশুরাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।

হেলিকপ্টারটির পাইলট কর্নেল মোঃ মঈনুল ইসলাম, বিজিবি এয়ার উইং-এর উপমহাপরিচালক, একজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ পাইলট। তিনি জানেন যে তাদের মিশন শুধু ত্রাণ পৌঁছানোই নয়, বরং আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মনে আশার আলো জ্বালিয়ে তোলা। মাঠে পৌঁছানোর সাথে সাথে কর্নেল মঈনুল একটি জরুরি খবর পান—পার্শ্ববর্তী অন্তপুর গ্রামের প্রবাসী কাজী নুরুল আমিনের ছোট্ট ছেলে নাজমুল, মাত্র দেড় বছর বয়সী, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিবারের লোকেরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।

কর্নেল মঈনুল এক মুহূর্তও দেরি না করে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করেন৷ হেডকোয়ার্টারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিনি হেলিকপ্টারটি দ্রুত উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত করেন। পরিবারের লোকজন এবং মুমূর্ষ শিশু নাজমুলকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের দিকে রওনা হয়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলে মঈনুল। তার মনের মধ্যে শুধুই একটাই চিন্তা—ছোট্ট নাজমুলের জীবন বাঁচাতে হবে।

বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সাথে সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্স অপেক্ষা করছিল। শিশুটিকে সিএমএইচ এ নিয়ে যাওয়া হয়। সিএমএইচ-এর চিকিৎসকরা তাদের সকল প্রচেষ্টা দিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেন।

বিজিবি শিশু নাজমুলকে সিএমএইচ এ নিয়ে যায়।

অবশেষে, প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় শিশুটি ধীরে ধীরে তার জ্ঞান ফিরে পায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে শিশুটির অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। কর্নেল মঈনুল যখন এই সুখবরটি শোনেন, তার চোখে আনন্দাশ্রু জমে ওঠে। একটি শিশুর জীবন বাঁচানোর পেছনে তার এই সাহসী পদক্ষেপ শুধু একজন পাইলট হিসেবে নয়, বরং একজন মানবিক মানুষ হিসেবে তার অবদান অমূল্য।

এভাবেই ফেনীর বন্যাকবলিত সেই সন্ধ্যায় কর্নেল মঈনুলের প্রচেষ্টায় এক শিশুর জীবন ফিরে পেল। এই ঘটনা শুধু একটি জীবনের গল্প নয়, বরং মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

সাঈফ ইবনে রফিক
কবি ও সাংবাদিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top