ঢাবি’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার মঞ্জুর হোসেনের অপরাধ ও দূর্নীতি; ঠিকাদারি ব্যবসায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

Picsart_23-12-05_08-48-10-216.jpg

ঢাবি’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার মঞ্জুর হোসেনের অপরাধ ও দূর্নীতি; ঠিকাদারি ব্যবসায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেওয়া হয়নি অনুমতি।

অপরাধ প্রতিবেদকঃ নিয়মবহির্ভূত ভাবে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের কার্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মঞ্জুর হোসেন। এমআই করপোরেশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। সংস্থাটির ট্রেড লাইসেন্স তাঁর নামেই। সম্প্রতি আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

যদিও এটি সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিধি-১৬-এ বলা আছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো ব্যাংক বা অন্য কোনো কোম্পানি স্থাপন, নিবন্ধীকরণ বা ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’ আবার বিধি-১৭-এ বলা আছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে সরকারি কার্য ব্যতীত অন্য কোনো ব্যবসায় জড়িত হতে অথবা অন্য কোনো চাকরি বা কার্য গ্রহণ করতে পারবেন না।’ 

বিধি অনুযায়ী, চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে মঞ্জুর হোসেন কোনো অনুমতি নেননি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের জুনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৩২ লাখ টাকা মূল্যের এমএসআর কেমিক্যাল রি-এজেন্ট সরবরাহের কাজ পেয়েছে মঞ্জুর হোসেনের প্রতিষ্ঠান এমআই করপোরেশন। এর আগে চলতি বছর একই ধরনের একাধিক ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠান। গত এপ্রিলে ৪৪ লাখ ও ৮ লাখ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ২৩ লাখ এবং জানুয়ারিতে ৭৭ হাজার টাকার কাজ পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২২ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি পরিমাণ অর্থের কাজ পেয়েছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে এমআই করপোরেশনের নামে থাকা মঞ্জুর হোসেনের অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৬৮ লাখ ৫ হাজার ৮৪ টাকা। চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল এই অ্যাকাউন্টের ট্রানজেকশনের তালিকা হাতে এসেছে। সেখানে দেখা গেছে, ২ মার্চ অ্যাকাউন্টে টাকা ছিল ৭২ লাখ ৪৪ হাজার ১৭৫ টাকা। ২৯ মার্চ ব্যালেন্স কমে হয় ৩৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। ২ এপ্রিল ২০ লাখ টাকা যোগ হয়। এক দিনের মাথায় আবার ৫৩ লাখ থেকে কমে হয় ৩৩ লাখ টাকা। আবার সেদিনই ২০ লাখ টাকা যোগ হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘আমি যখন ছাত্ররাজনীতি করতাম, তখনকার সময়ের প্রতিষ্ঠান এটি। এখন এসবের সঙ্গে আমি জড়িত নই। তবে আমার নামে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন হয়।’ তাঁর অভিযোগ একটি পক্ষ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনে সুযোগ নেওয়ার উদ্দেশ্যে বিষয়টি সামনে এনে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। 

রেজিস্ট্রার ভবনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঞ্জুর হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সদস্য।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের ব্যবসা করতে পারবে না। বিষয়টি সব অফিসে বলা আছে।’

মঞ্জুর হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কী নিয়ম রয়েছে সেটা এখন আমার জানা নেই। আমি সব বিষয় এখনো হাতে পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও সংবাদ পড়ুন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি – পিএইচডি থিসিসে জালিয়াতি

আরও সংবাদ পড়ুন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি; দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক

আরও সংবাদ পড়ুন।

অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top