আট ডিজিটাল ব্যাংক অনুমোদন পেল
অর্থনৈতিক প্রতিবেদকঃ সরকারের শেষ সময়ে দু’টি ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে লেটার অব ইনটেন্ট বা সম্মতিপত্র (এলওআই) দেওয়া হয়। তবে সব মিলিয়ে নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে মোট ৮টি ডিজিটাল ব্যাংক। এলওআই পাওয়া ডিজিটাল ব্যাংকগুলো হলো- নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি।
রোববার গভর্নর আব্দুল রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন ডিজিটাল ব্যাংক অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, আটটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে নীতিগত অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রথমে দুটিকে এলওআই দেওয়া হয়।
পর্যায়ক্রমে আরো ছয়টি পাবে। এর মধ্যে তিনটি ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত। এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। শুধু নীতিমালা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খোলে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। এর মধ্যে আছে ব্র্যাক ব্যাংকের এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশের ‘বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক’, ব্যাংক এশিয়ার ‘ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’ ও ‘ডিজি টেন ব্যাংক পিএলসি’।
ডিজি টেন জোটে আছে- সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।
এছাড়া আরো কিছু প্রতিষ্ঠানকে ছয় মাস পর অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, জাপান বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি।
সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়াদ শেষের দিকে। সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। তাই উদ্যোক্তারা সরকারকে এ ব্যাপারে এক ধরেনের চাপ তৈরি করেন। কারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে তখন হয়তো পুরো বিষয়টি ফাইলবন্দি হয়ে যাবে। তাই উদ্যোক্তাদের লবিংয়ে ও সরকারের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৪টি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এছাড়া বিশেষ আইনে গঠিত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংক হিসেবে অনুমোদন হয়।
সব মিলিয়ে দেশে প্রচলিত ধারার ব্যাংক আছে ৬১টি। নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে ৩৪টি। এর সঙ্গে এবার যোগ হচ্ছে ৮টি ডিজিটাল ব্যাংক।
জানা গেছে, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য শুধু প্রধান কার্যালয় থাকবে। সেবা প্রদানে এই ব্যাংকের আর কোনো স্থাপনা, ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি), শাখা বা উপশাখা, এটিএম, সিডিএম অথবা সিআরএম থাকবে না। সব সেবাই দেওয়া হবে অ্যাপনির্ভর, মুঠোফোন বা ডিজিটাল যন্ত্রে।
সেবা মিলবে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা। ডিজিটাল ব্যাংক ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড ও অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য চালু করতে পারবে। কোনো প্লাস্টিক কার্ড দিতে পারবে না। এ ব্যাংকের গ্রাহকরা অবশ্য অন্য ব্যাংকের এটিএম, এজেন্টসহ নানা সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ঋণপত্রও (এলসি) খুলতে পারবে না। শুধু ছোট ঋণ দেবে, বড় ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দেওয়া যাবে না। তবে আমানত নিতে কোনো বাধা নেই। একেকটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য নূ্যূনতম মূলধন লাগছে ১২৫ কোটি টাকা, যা প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ক্ষেত্রে ৫০০ কোটি টাকা। নীতিমালায় বলা হয়, ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে উদ্যোক্তাদের অর্ধেককে হতে হবে প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং, উদীয়মান প্রযুক্তি, সাইবার আইন ও বিধিবিধান বিষয়ে শিক্ষা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। বাকি অর্ধেককে হতে হবে ব্যাংকিং, ই-কমার্স এবং ব্যাংকিং আইন ও বিধিবিধান বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) ব্যাংকিং পেশায় কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না; বাড়ছে লুকোচুরি