আওয়ামী লীগ কেবল জনগণের কাছেই দায়বদ্ধ – প্রধানমন্ত্রী
বাসস
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জনগণের শক্তিকেই তাঁর দলের শক্তি হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ কেবল জনগণের কাছেই দায়বদ্ধ।
তিনি বলেন, “জনগণের শক্তিই আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের কোন প্রভু নেই, জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু। আমরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।”
ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আজ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের বিশেষ বর্ধিত সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগই শুধু দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ কারণেই আমরা নির্বাচনের সময় দেশবাসীর কাছে আমাদের অঙ্গীকার করে থাকি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কতটুকু করতে পেরেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব; তা আমরা শুধু জনগণকে বলি, অন্য কাউকে নয়।”
এ প্রসঙ্গে তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের বলেন, “আমি চাই সবাই এটা মাথায় রেখে একসঙ্গে কাজ করবেন।”
শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের সাড়ে ১৪ বছরের অর্জন তৃণমূলের মানুষের সামনে তুলে ধরতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনাও দেন। একইসঙ্গে আগামী সাধারণ নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি দলকে শক্তিশালী করতে বলেন এবং জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করার আহবান জানান।
সভায় আওয়ামী লীগের প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অংশ নেন।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, আওয়ামী লীগের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভা ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের নেতাদের নির্দেশনা দিতে এ ধরনের সভা করে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৭-এর ২৩ জুন এধরনের সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার ফলে আজ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ প্রদত্ত ‘উন্নয়নশীল দেশের’ মর্যাদা পেয়েছে। এজন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হয়েছে।
২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষের কাছ থেকে আমি জানতে চাই তারা কি চান বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক।
তিনি বলেন, “আপনারা বাংলাদেশের জনগণকে প্রশ্ন করবেন। কারণ তারাই (জনগন) ভোটের মালিক। তারা যদি চায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে, তাহলে নৌকা মার্কায় আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে। আর আওয়ামী লীগ ভোট পেলেই এটা সম্ভব হবে। তাছাড়া অন্য কেউ এটা করবে না।”
দেশের কামার, কুমার, তাঁতি, জেলেসহ সকল পেশার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সকলের জন্যই কাজ করব, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।”
“আওয়ামী লীগ প্রতিটি মানুষের জন্য কাজ করেছে; এর আগে আর কেউ জনগণের জন্য চিন্তা বা কাজ করেনি,” উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের এই বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং একই সাথে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায় বলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। তাঁর দল একই সঙ্গে বাংলাদেশের ভাগ্যও বদলে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “কতিপয় লোক আছে যারা চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত ও খুনি। আসলে খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া ও জিয়াউর রহমান সকলেই খুনি। দেশের মানুষ তাদের হাতে নিরাপদ নয়, দেশও নিরাপদ নয়।”
তিনি বলেন, “তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ (আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী) ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ যেসব উন্নয়ন কাজ করেছে তার সবগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় ‘মঙ্গা’ চলতো রংপুরে, যার জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো সেখানকার লোকদের।
তিনি বলেন, “কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেখানে কোন মঙ্গা নেই, নেই দুর্ভিক্ষও। এর কারণ হলো আওয়ামী লীগ, যে দলের প্রতিষ্ঠা করছেন জাতির পিতা ।”
তিনি আরো বলেন, “যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, জনগণের জন্য কাজ করে, মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটায়।
সভার শুরুতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
তরুণ প্রজন্মই হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মূল শক্তি – প্রধানমন্ত্রী
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।