যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কংগ্রেসম্যানের চিঠি

Picsart_23-07-28_13-12-20-127.jpg

যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কংগ্রেসম্যানের চিঠি –
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন ও মানবাধিকার হরণকারীদের নিষিদ্ধের দাবী

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিতে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ, শান্তিরক্ষা মিশনে র‍্যাবের মানবাধিকার হরণকারীদের নিষিদ্ধ এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ও পরিচালনায় নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে চিঠি দিয়েছেন ১৪ কংগ্রেসম্যান।

‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের সহিংসতা’র বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই২০২৩) এই চিঠি দেওয়া হয়।

১৪ কংগ্রেসম্যানের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের সন্ত্রাস, নির্যাতন ও হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য আমরা আজ আপনাকে চিঠি লিখছি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউজ এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসসহ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক ভীতি প্রদর্শন, হামলা, মিথ্যা কারাবাস, নির্যাতন, গুম, এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।

এছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সরকার ‘সাংবাদিক ও মানবাধিকার রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘায়িত বিচারের’ জন্য দোষী। বিশেষ করে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) নির্যাতন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। অবিলম্বে নিন্দার দাবি জানাচ্ছি।

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে দেওয়া ১৪ কংগ্রেসম্যানের চিঠি

দীর্ঘ চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদসহ র‍্যাবের বর্তমান বা সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো হাসিনা সরকারের কথিত সন্ত্রাসের রাজত্বকে ধীর করতে পারেনি। কারণ সরকার কর্তৃক কথিত ভীতি প্রদর্শন এবং সহিংসতা কেবল বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত ৬ থেকে ৮ মাস ধরে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ-সাহসী বিক্ষোভকারী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছে। এসব বিক্ষোভে প্রায়ই সহিংসতা, কাঁদানে গ্যাস এবং পুলিশ, অন্যান্য রাষ্ট্রীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও হাসিনার সমর্থকদের নৃশংস হামলা হয়েছে।

নির্বাচনী জালিয়াতি, সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের ইতিহাস বিবেচনা করে হাসিনা সরকার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের অনুমতি দেবে- আমরা সে বিষয়ে অত্যন্ত সন্দিহান।

‘এমন নানা কারণ এবং দুর্নীতি, স্বৈরাচার, সহিংসতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের আরও বিষয়ের দাবির জন্য’ 

নিম্নলিখিত আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা:

১. শেখ হাসিনা সরকারের সংঘটিত সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সহিংসতার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ স্থগিত করার জন্য জাতিসংঘ অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ।

২. যতক্ষণ পর্যন্ত র‍্যাবের মানবাধিকার লংঘনের পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত শেষ না হয়, ততক্ষণ এই বাহিনীর কোনো সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত হতে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগের পদক্ষেপ গ্রহণ।

৩. জাতিসংঘ বিশ্বজুড়ে নিরপেক্ষ সরকারগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের তত্ত্বাবধানে এবং পরিচালনায় অংশ নেবে। এতে ভোটারদের ভয়ভীতি, ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি বা ভোটারদের ওপর হামলা প্রতিরোধের জন্য শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

শেষে উল্লেখ করা হয়, আমরা বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছি, যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংঘটিত সহিংসতার অবসান চায়।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) লেখা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেসম্যান বব গুড, অ্যানা পলিনা-লুনা, র‍্যালফ নরম্যান, টম পেরি, যশ ব্রেচেন, এন্ড্রু ক্লেড, এইলি ক্রেইন, পল এ গসার, রনি এল জ্যাকসন, ব্রইন বেবিন, করি মিলস, ডাগ লামাফা, র‍্যান্ডি ওয়েবার ও গ্লেন গ্রোথম্যান।

আরও সংবাদ পড়ুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top