আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক
সাগর চৌধুরীঃ আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (২) তাহেরা খসরু আলম, স্বামী- আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (৩) গোলাম সরোয়ার, পিতা-মরহুম গোলাম মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারম্যান, হোটেল সারিনা, হাউজ নং-২৫ ও ২৭, রোড নং-১৭, বনানী এলাকা ঢাকা, (৪) সাবেরা সরোয়ার (নীনা), ব্যবস্থাপনা পরিচালক, হোটেল সারিনা, স্বামী- গোলাম সরোয়ার, চেয়ারম্যান, হোটেল সারিনা, হাউজ নং-২৫ ও ২৭, রোড নং-১৭, বনানী ঢাকা, (৫) আওরঙ্গজেব নান্নু, বিল্ডিং ইন্সপেক্টর, নকশা অনুমোদন শাখা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ঢাকা কর্তৃক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর মালিকানাধীন বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭নং প্লটটি ডেভেলপ করার নামে উক্ত প্লটের সাথে পার্শ্ববর্তী ২৫ নং প্লট ক্রয় পূর্বক অনুমোদিত নকশা না মেনে উভয় প্লটে যথাক্রমে ২২ তলা ও ২১ তলা ভবন নির্মাণ শেষে পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লি: পরিচালনা করে পরস্পরের সাথে যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণপূর্বক একে অপরের সহায়তায় নিজেদেরকে লাভবান করার দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (২নং আইন) এর ৫(২) ধারায় অপরাধ করায় দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার উপপরিচালক সেলিনা আখতার বাদী হয়ে দুদক, সজেকা, ঢাকা-১ এ একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার বিবরণ:
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম এর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্দেশ প্রদান করা হয়। তাদের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম উভয়ে ঢাকাস্থ বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ ও ২৫ নং প্লটে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লি: এর শেয়ার হোল্ডার ছিলেন।
জব্দকৃত এবং সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় আরো দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী মিসেস তাহেরা খসরু আলম যৌথ ভাবে তার ভায়রা ভাই গোলাম সরোয়ার এবং শ্যালিকা মিসেস সাবেরা সরোয়ার নীনার সাথে হোটেল সারিনা ইন লিঃ নামক পাঁচ তারকা হোটেল ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকার বিষয়টি গোপন করে গেছেন। এছাড়াও আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার ভায়রা আসামী গোলাম সরোয়ার বনানী ১৭ নং রোডের ২৫নং প্লটটি, যা বসতি টাওয়ার নামে পরিচিত সেটি যৌথ নামে ক্রয় করে রাজউকের অনুমোদিত ১৫ তলা নকশার স্থলে ২১তলা ভবন নির্মান করেন। আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রেসিডেন্ট, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে পরিকল্পিত ভাবে নানা কৌশলে প্রথমে নিজের
ভায়রাকে দিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের (সিএসই) বর্ণিত ২৭ নং প্লটের ডেভোলপার নিযুক্ত করে পরে সেখানে নিজে স্ত্রীসহ যুক্ত হয়ে প্লটটি আত্মসাতের সাথে সম্পৃক্ত হন।
অনুসন্ধানকালে জব্দকৃত রেকর্ডপত্র
প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে জব্দকৃত রেকর্ডপত্র এবং সংগৃহীত রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, (০১জানুয়ারী ১৯৯৫) তারিখ থেকে (২১ডিসেম্বর ২০০১) পর্যন্ত আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর জন্য ঢাকায় “সিএসই ভবন” নির্মাণের প্রয়োজনে রাজউক থেকে ঢাকাস্থ বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটির নিলাম ক্রয় করা হয়। রাজউক থেকে প্লটটির লীজ ডিড রেজিষ্ট্রেশনের আগেই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রেসিডেন্ট আমীর খসরু মাহামুদের সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদদের ২৫/৯/১৯৯৯ তারিখের ৭৪তম বোর্ড সভায় গোলাম সরোয়ার (জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আপন ভায়রা ভাই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, হোটেল হাবর ভিউ, ৭২১ সিডিএ এভিনিউ নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম গ্রহ ৪টি প্রতিষ্ঠান এর প্রস্তাব নিয়ে ঢাকার উল্লিখিত প্লটের ডেভলপার নিয়োগ দেয়ার আলোচনা হয়। উল্লেখ্য উক্ত বোর্ড সভায় সভাপতিত্ব করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
৭৪তম বোর্ড সভার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ৭৫তম বোর্ড সভায় গোলাম সরোয়রি কৈ গত ১৫/১১/১৯৯৯ খ্রি. তারিখে ৭৫ নং বোর্ড সভায় একটি বেজমেন্ট ও ৫টি ফ্লোর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়ার শর্তে ডেভেলপার জনাব গোলাম সরোয়ার এর সাথে চুক্তি সম্পাদন করার সিদ্ধান্ত হয়।
গত (১৯জানুয়ারী ২০০০) তারিখে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর পক্ষে চীফ এক্সিজিকিউটিভ অফিসার ওয়ালিউল মারুফ মতিন এবং রাজউকের মধ্যে ঢাকার বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটি লীজ ডিড নং-৪৮৩(ডিভিপি) রেজিষ্ট্রি করা হয়। উক্ত লীজ ডিড রেজিষ্ট্রির পূর্বেই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর ৭৪ এবং ৭৫ নং বোর্ড সভায় বনানীর ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লট এর জন্য ডেভোলপার নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছিল। তবে উক্ত বোর্ড সভায় গোলাম সরোয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সারিনা ইন নামক কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে ডেভোলপার চুক্তির কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর ৭৪ এবং ৭৫ তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে পরিকল্পিত উপায়ে গত ১৩/২/২০০০ তারিখ আলোচ্য প্লট ডেভোলপ সংক্রান্তে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিইও ওয়ালিউল মারুফ মতিন এর সাথে হোটেল সারিনা ইন লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সরোয়ার এর সাথে একটি বেজমেন্ট এবং ৪ (চার)টি ফ্লোর (৫টি ফ্লোরের পরিবর্তে) দেয়ার শর্তে একটি অনিবন্ধিত চুক্তি সম্পাদিত হয়। অর্থাৎ ঢাকার বনানী বানিজ্যিক এলাকার একটি মূল্যবান ফ্লোর দেয়া থেকে বিরত থেকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের একটি ফ্লোর আত্মসাত করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হয়। পরবর্তীতে হোটেল সারিনা ইন লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সরোয়ার মধ্যে ২৩/৫/২০০০খ্রি. তারিখে বনানী রোড নং-১৭ এর ২৭ নং প্লট সংক্রান্তে আরো একটি ৬২১৬নং রেজিষ্টার্ড আমমোক্তার চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিতে হোটেল সারিনা ইন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সরোয়ারকে মর্টগেজ প্রদানের ক্ষমতা সহ সব ধরনের আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়। এই আমমোক্তার নামায় কোন প্রকার ফ্লোর এ্যালোকেশন এর কথা উল্লেখ নেই। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর কতোতম বোর্ড সভায় ডেভোলপার নিয়োগের চুক্তি হয়েছিলো সেটিও এই আমমোক্তার নামায় উল্লেখ নেই।
উল্লেখ্য হোটেল সারিনা ইন লিঃ নামক প্রতিষ্ঠানটি জয়েন্ট স্টক এন্ড কোম্পানীজ থেকে গত ১৯/১২/১৯৯৯খ্রিঃ তারিখে (নিবন্ধন নং-৩৫১৭/৯৯) তারিখে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত। সুতরাং সদ্য নিবন্ধিত হোটেল সারিনা লিঃ কে বর্ণিত প্লটে ডেভোলপার নিয়োগে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর কোন সিদ্ধান্ত ছিলোনা। সিইও মরহুম ওয়ালিউল মারুফ মতিন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ভায়রা ভাই আসামী গোলাম সরোয়ার ও শ্যালিকা আসামী সাবেরা সরোয়ার নীনার প্রতিষ্ঠানের সাথে অবৈধ ভাবে ডেভোলপার নিয়োগের চুক্তি করেন। অতঃপর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম গত ১০/৭/২০০০খ্রি. তারিখে হোটের সারিনা ইন এর ৫০% শেয়ার ক্রয় করে মালিকানা লাভ করেন। তারা গত ২০/৪/২০০১ খ্রি. তারিখে আসামী গোলাম গোলাম সরোয়ার বরাবরে এবং আসামী তাহেরা খসরু আলম তার বোন আসামী সাবেরা সরোয়ার নীনা বরাবরে তাদের শেয়ার ত্যাগ করে চলে যান।
পরবর্তীতে আবার ৩/৯/২০০২ খ্রি. তারিখে পুনরায় হোটের সারিনা ইন এর সাথে যুক্ত হন এবং গত ১০/০১/২০১০খ্রিঃ তারিখ পর্যন্ত একটানা হোটেল সারিনা ইন লিঃ এর মালিকানার (বসতি টাওয়ার সহ) অংশীদার ছিলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হোটেল সারিনার নির্মান কাজ শেষে হোটেল সারিনা ইন নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল পরিচালনা করেছেন।
আরো উল্লেখ করা যাচ্ছে যে, গত ১৯/০১/২০০০ খ্রি. তারিখে ঢাকার বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটি লীজ দলিল রেজিষ্ট্রির পরে ১৩/২/২০০০খ্রিঃ তারিখে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা সারিনা ইন লিঃ নামক প্রতিষ্ঠান (১৯/১২/১৯৯৯ খ্রি. তারিখে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত) উক্ত প্রতিষ্ঠানকে সিএসই এর মূল্যবান সম্পত্তিটির ডেভোলপ করার জন্য একটি অনিবন্ধিত চুক্তি করা হয় ও যাবতীয় উন্নয়ন কার্যাদি সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেয়া হয়।
গত ১৫/১১/১৯৯৯ খ্রিঃ তারিখে ৭৫ তম বোর্ড সভায় গোলাম সরোয়ারের HOTEL HABOUR VIEW নামক প্রতিষ্ঠানকে একটি বেজমেন্ট এবং ৫টি ফ্লোর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে দেয়ার শর্তে জমিটি ডেভোলপ করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যেহেতু ২৫/৯/১৯৯৯ তারিখে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ৭৪ তম বোর্ড মিটিং এর সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর তখনকার প্রেসিডেন্ট আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সেহেতু তিনি জানতেন যে, সারিনা ইন নামক প্রতিষ্ঠানকে সি,এস,ই এর বোর্ড সভা থেকে বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটির ডেভোলপার নিয়োগ করা হয়নি। তিনি কৌশলে তার আপন ভায়রা ভাই ও শ্যালিকার নামে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে প্লটটি আত্মসাতের কার্যাদি সম্পন্ন করেন।
অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন কালে নিজের আপন ভায়রা ভাই জনাব গোলাম সরোয়ারকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর ৭৪ এবং ৭৫ তম পরিচালনা পর্ষদের সভার সিদ্ধান্ত না মেনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের তৎকালীন সিইও মরহুম ওয়ালিউল মারুফ মতিনের সাথে যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটিতে ডেভোলপার হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেন এবং পরে তিনি নিজে তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম শ্যালিকা ও ভায়রা ভাই ও শ্যালিকার ডেভোলপার প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে ভবন নির্মাণ করার নামে প্লটটি আত্মসাত করেছেন।
মরহুম ওয়ালিউল মারুফ মতিন গুলশান সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে গত ২০/১১/০৪ খ্রিঃ তারিখে ১৭২৯৪ নং দলিলে পুরো প্লটের জমি এবং ৪টি ফ্লোর একটি বেজমেন্ট আসামী গোলাম সরোয়ারের নামে রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করেন। আলোচ্য রেজিষ্ট্রি দলিলে উক্ত নং প্লটের উপর নির্মিত ফ্লোরের বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই। পরবর্তীতে বর্ণিত প্লটটিতে নির্মিত অন্যান্য ফ্লোরের বিষয় উল্লেখ করা থেকে বিরত থেকে রাজউক ও ভূমি অফিস হতে আসামী গোলাম সরোয়ার নিজের নামে নামজারী করে নেন। দলিল রেজিষ্ট্রিকালে উক্ত দলিলে পরিশোধিত মূল্য অপেক্ষা কম মূল্য প্রদর্শন করে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর দেয়া তথ্য মোতাবেক উক্ত দলিলে বর্ণিত ফ্লোর গুলি বিক্রয়ের বিনিময়ে তারা ৩,২৪,০০,০০০(তিন কোটি চব্বিশ লক্ষ)/টাকা গ্রহণ করেছেন। তবে রাজস্ব ফাকি দেয়ার জন্য হোটেল সারিনা ইন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক কম মূল্যে অর্থ্যাৎ ১,৭৪,০০,০০০(এক কোটি চুয়াত্তর লক্ষ) টাকা দলিল (১৭২৯৪) মূল্য লেখা হয়েছে।
এমতাবস্থায় আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী আসামী মিসেস তাহেরা খসরু আলম, ভায়রা আসামী গোলাম সরোয়ার এবং শ্যালিকা আসামী সাবেরা সরোয়ার নীনা পরস্পরের যোগসাজশে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর পরিচালনা পর্ষদের সভার সিদ্ধান্ত না মেনে পরিকল্পিত উপায়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিইও মরহুম ওয়ালিউল মারুফ মতিনের সাথে যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটিতে প্রথমে আসামী গোলাম সরোয়ারকে ডেভেলপার হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেন। পরে তিনি ও তার স্ত্রী, ভায়রা ভাই ও শ্যালিকার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে ২২(বাইশ) তলা ভবন নির্মাণ
করে তাদের নিজস্ব মালিকানায় একটি পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেল পরিচালনা করেছেন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত পাশ কাটিয়ে ভায়রা ভাই এবং শ্যালিকার নামের প্রতিষ্ঠানের সাথে অবৈধ চুক্তি করে ঢাকার বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ নং প্লটটি আত্মসাত করেছেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রথম প্রেসিডেন্ট (১/১/১৯৯৫-২১/১২/১৯৯৫ পর্যন্ত), তিনি একজন সংসদ সদস্য এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর বোর্ড সভার অনুমোদন ছাড়া উক্ত প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান প্লট প্রথমে চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার
মরহুম ওয়ালিউল মারুফ মতিনের সহায়তায় ডেভেলপার নিয়োগ ও পরবর্তীতে নিজে ও তার স্ত্রী হোটেল সারিনা ইন লিঃ এর পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে রাজউকের কর্মকর্তাদের সহায়তায় নকশা বর্হিভূত ভাবে ভবন নির্মান, দলিল রেজিট্রি ও নামজারী করেছেন।
রাজউক এর বিল্ডিং পরিদর্শক আওরঙ্গজেব নান্নু তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে বনানী বানিজ্যিক এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ ও ২৫ নং প্লটে বিসি কমিটি কর্তৃক ১৫ তলার অনুমোদিত নকশার স্থলে ২২ তলা এবং ২১ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে সহায়তা করেছেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিজের আপন ভায়রা ভাই ও শ্যালিকার নামের প্রতিষ্ঠানকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্লট হস্তান্তর করে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এর প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব রত অবস্থায় নিজে স্ত্রীসহ সেই প্রতিষ্ঠানের মালিকানা অর্জন করে আত্মসাতের মাধ্যমে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। উক্ত কার্যাদি সম্পন্ন করে আসামী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিজে, তার স্ত্রী মিসেস তাহেরা খসরু আলম, ভায়রা ভাই গোলাম সরোয়ার এবং শ্যালিকা মিসেস সাবেরা
সরোয়ার নীনাসহ রাজউকের বিল্ডিং পরিদর্শক আসামী আওরঙ্গজেব নান্নুর সাথে পরস্পরের সাথে যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণপূর্বক একে অপরের সহায়তায় নিজেদেরকে লাভবান করে দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ধারা সহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (২নং আইন) এর ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন।
বিধায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম, ভায়রা ভাই গোলাম সরোয়ার, শ্যালিকা মিসেসনসাবেরা সরোয়ার নীনা, রাজউকের বনানী এলাকার বিল্ডিং পরিদর্শক আওরঙ্গজেব নান্নুর বিরুদ্ধেদন্ডবিধির
৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ধারা সহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (২নং আইন) এর ৫(২) ধারায় অপরাধ করায় দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার উপপরিচালক সেলিনা আখতার বাদী হয়ে দুদক, সজেকা, ঢাকা-১ এ আজ একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনা স্থলঃ
রাজকউক ভবন ঢাকা এবং বনানী বানিজ্যিক এলাকা, ঢাকা।