এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস; ভূরুঙ্গামারী ইউএনওকে শোকজ

Picsart_22-09-24_15-03-45-671.jpg

এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস; ভূরুঙ্গামারী ইউএনওকে শোকজ

অপরাধ প্রতিবেদকঃ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ইউএনওর দায়িত্বে অবহেলা ছিল। এ কারণে তাঁকে গত ২০ সেপ্টেম্বর কারণ দর্শানো চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে এই চিঠির জবাব দিতে হবে।

নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বাংলা প্রথম পত্র এবং ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষার দিনে ছয়টি বিষয়ের প্রশ্নপত্রের প্যাকেট গোপনে নিয়ে নেন। পরে তিনি স্কুলের শিক্ষক যোবায়ের হোসেন, সোহেল আল মামুন, হামিদুর রহমান ও রাসেল মিয়াকে দিয়ে ওই প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তাঁর স্কুলের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে সরবরাহ করেন।

এই বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হলে তিনি ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন, অফিস কক্ষের পরিবর্তে কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় প্রশ্নপত্র খোলা হয়েছে। কিন্তু তিনি বিষয়টি চেপে যান। এ ব্যাপারে ইউএনও বলেছেন, তিনি দ্বিতীয় তলায় অতিরিক্ত প্রশ্নগুলো দেখেছেন। সেসঙ্গে অফিস কক্ষে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য অফিসার আদম মালিক চৌধুরীর দায়ের করা মামলায় নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান, ইংরেজির শিক্ষক রাসেল মিয়া, ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক যোবায়ের হোসেন, কৃষি বিষয়ের শিক্ষক হামিদুর রহমান, বাংলার শিক্ষক সোহেল আল মামুন এবং স্কুুলের পিয়ন সুজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সাময়িকভাবে বহিস্কৃত হয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহমান।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তদন্ত করেছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ফারাজ উদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি। এই কমিটিতে রয়েছেন উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ মণ্ডল, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের উপপরিচালক আক্তারুজ্জমান। এ ছাড়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন তদন্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, গ্রেপ্তার করা শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এর ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান হলেন ইউএনও দীপক কুমার দেব শর্মা। তিনি উপজেলার ছয়টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করেন। থানায় রাখা প্রশ্নপত্র বাছাইয়ের সময় ইউএনওর উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু তিনি নিজে না থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই দায়িত্ব দেন। ১৩ সেপ্টেম্বর ছয়টি কেন্দ্রের কয়েক হাজার প্রশ্নপত্র বাছাইয়ের সময় প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ নেন নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান।

পরে গ্রেপ্তারের পর স্কুলের আলমারিতে থাকা তাঁর ব্যাগ থেকে বেশ কয়েকটি প্রশ্নপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top