মাদক হিসেবে পরিচিত গাঁজার নানাবিধ ব্যবহার!বাংলাদেশ ও ভারতে গাঁজা নিষিদ্ধ কেন?
বিশেষ প্রতিবেদকঃ মাদক হিসেবে পরিচিত গাঁজার নানাবিধ ব্যবহার গাঁজার ঔষধি ব্যবহার হাজার বছরের পুরাতন বিষয়
গাঁজাগাছের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ার স্তেপ অঞ্চলে। এরপর তা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এক সময় মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত গাঁজাকে বর্তমানে আমরা মাদক হিসেবে জানলেও এর অনেক ঔষধিগুণের কথা জানি না। বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষে পুরোপুরিভাবে বেআইনি এ গাছটির নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। বস্ত্রশিল্প, খাদ্য, ওষুধ, মাদক ও বিনোদনের জন্য এ গাছটি ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবে গাঁজার ব্যাপক ব্যবহারের কথা জানা যায়।
গাঁজা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গাছ?
ওষুধ হিসেবে গাঁজার ব্যবহার ব্যাপক। ঔষধি গুণের কারণে এক সময় একে ‘পবিত্র ঘাস’ বলা হতো। মানুষের সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া-সহ বহু অসুখের উপশমে এটা ব্যববহৃত হয়। বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে গাঁজা বা ক্যানাবিস-এ রয়েছে ৪৮০টি বিভিন্ন প্রাকৃতিক যৌগ। যার মধ্যে ৬৬টি যৌগকে বলা হয় ক্যানাবিনয়েডস। যা এইডস, ক্যান্সার, স্পাইনাল কর্ডের আঘাত, ট্যুরেট সিনড্রোম, গ্লুকোমা ইত্যাদির চিকিৎসায় কার্যকরী।
চিকিৎসাশাস্ত্রে গাঁজা পরিচিত উত্তেজক, বেদনানাশক ও নিদ্রাকারক হিসেবে। গাঁজাপাতার গুঁড়া ডায়রিয়া বা উদরাময় নিরাময় করে এবং এর রস ১৫-২০ ফোঁটা দিনে তিনবার খেলে রক্ত আমাশয় নিরাময় হয়। গাঁজা থেকে সৃষ্ট ভাং শিশুদের ক্ষেত্রে ধনুষ্টংকার রোগেও বিশেষ ফল দেয়। প্রাচীনকালে গনোরিয়ার চিকিৎসায় গাঁজার ব্যবহার হতো। দুধের সঙ্গে বেটে গনোরিয়ার ক্ষতস্থানে লাগানো হতো এটা। বর্তমানে ইউরোপে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ব্যথা কমানোর জন্য গাঁজার ধোঁয়া পান করতে দেওয়া হয়। হাঁপানি রোগের জন্য গাঁজা দারুণ কার্যকর। হৃদযন্ত্রের সমস্যায়ও গাঁজা থেকে প্রস্তুত ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
ঔষধি গুণের কারণে এক সময় গাঁজাকে ‘পবিত্র ঘাস’ বলা হতো যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা গাঁজা, ভাং ও মারিজুয়ানার ওপর গবেষণা করে জেনেছেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যথানাশক ওষুধ এগুলো থেকে প্রস্তুত করা সম্ভব, যা মানুষের কোনো ক্ষতি করবে না। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, মানুষের বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের জন্য চেতনানাশক তৈরিতে এর বহুল ব্যবহার করা যাবে। শিগগিরই গাঁজা ও মারিজুয়ানার নির্যাস থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এ ওষুধ প্রস্তুত হবে।
বস্ত্রশিল্পে গাঁজার ব্যবহার
গাঁজা গাছ মানুষের সুতা বা কাপড়ের অন্যতম প্রধান উৎস। কারণ, পাট বা তুলা দুনিয়ার সব জায়গায় সহজে বা চাহিদা মতো উৎপাদন হয় না। আঠারো শতকে উৎপাদিত কাপড়ের ৮০ শতাংশ আসত গাঁজা গাছ থেকে। ১৯৬০-এ বিখ্যাত ডেনিম কোম্পানি লিভাইস গাঁজা সুতার ডেনিম প্যান্ট, শার্ট, জ্যাকেট ব্যাপকভাবে উৎপাদন করে। এখনও আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, চীন গাঁজাজাত কাপড় উৎপাদন করে।
মানুষের খাদ্য হিসেবে গাঁজা গাছের গুরুত্ব কতটা?
চীনারা হাজার বছর আগে থেকে গাঁজার বীজকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করত। তারা গাঁজাবীজের ঔষধি ব্যবহার শেখে তিন হাজার বছর আগে। ১০০ গ্রাম গাঁজাবীজে আছে ৫৩৫ গ্রাম ক্যালোরি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডেইলি ভেল্যু’-জানিয়েছে, গাঁজার বীজ প্রতিদিন মানুষের খাদ্যমান চাহিদার ৬৪ শতাংশ মেটাতে সক্ষম। এতে ৪৯ শতাংশ ফ্যাট ও ৩১ শতাংশ প্রোটিন আছে। উদ্ভিদজগতে এর প্রোটিন সবচেয়ে উত্কৃষ্ট। এতে ওমেগা ৩, ওমেগা ৬ ও গামা লিনোলেনিক অ্যাসিড (জিএলএ) আছে যা মানবদেহের জন্য খুবই জরুরি। ভিটামিন ই, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংকের উৎস হলো এ গাঁজার গাছ। এর অ্যামাইনো অ্যাসিড হলো আরজিনাইন, যা মানবদেহে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে। নাইট্রিক অক্সাইড হলো গ্যাস মলিকিউল, যা রক্তের প্রবাহকে স্বাভাবিক করে আর গামা লিনোলেনিক অ্যাসিড হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। ৩ : ১ পরিমাণের ওমেগা ৬ ও ওমেগা ৩ চর্মরোগ বিশেষত একজিমার জন্য উপযোগী। এর প্রোটিন গরু বা ভেড়ার মাংসের সমপর্যায়ের। গাঁজা গাছে যে অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, তা মানবদেহের জন্য জরুরি হলেও মানবদেহে তা উৎপাদন হয় না। গাঁজা গাছের অ্যামাইনো অ্যাসিড লাইসিন উদ্ভিদজগতের বেশ দুষ্প্রাপ্য প্রোটিন যৌগ। নারীদের ঋতুস্রাব বয়সকালে বন্ধ হওয়ার সময় ৮০ শতাংশ মহিলাদের মনো-দৈহিক সমস্যা হয়। এটা হয় প্রোল্যাক্টিন হরমোনের জন্য। গাঁজার গামা লিনোলেনিক অ্যাসিড মূলত প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন ই১ উৎপাদন করে। এটা প্রোল্যাক্টিন হরমোনের হরমোনের নিসরণ কমায়।
থাইল্যান্ডের গাজাচাষী
মানবদেহের জন্য আঁশজাতীয় খাবার খুব জরুরি। গাঁজার বীজে আছে দ্রবণীয় ফাইবার বা আঁশ ২০ শতাংশ এবং ৮০ শতাংশ অদ্রবণীয় ফাইবার। দ্রবণীয় ফাইবার হলো ডাইজেস্টিভ ফাইবারের জরুরি উৎস। এটা ব্লাড সুগারও কমায়।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবে গাঁজার ব্যবহার
হিন্দু পুরাণ অনুসারে, গাঁজা গাছের জন্ম অমৃত থেকে। সমুদ্রমন্থনে মন্থনদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত মন্দারপর্বতে ঠিক একফোঁটা অমৃত দেবতাদের হাত থেকে ভুলবশত পড়ে যায়। যে স্থানে অমৃতের ওই ফোঁটাটা পড়ে, সেখানেই জন্ম নেয় প্রথম গাঁজাগাছ। তারপর দেবাদিদেব মহাদেব মনুষ্যজাতির মঙ্গলসাধনে ওই গাছকে নিজের হাতে সমতলে এনে রোপণ করেন। যদিও বর্তমানে ভারতবর্ষে গাঁজা পুরোপুরিভাবে বেআইনি। সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগ হিসেবে এই দেশে গাঁজা চাষ করা হয় ঠিকই, তবে তার জন্য সরকারি অনুমতি লাগে। কিন্তু ভারতবর্ষের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক প্রেক্ষাপটে এই গাঁজার ব্যাপকতা আজও চোখে পড়ার মতো। বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও সাধু-সন্ন্যাসী তো বটেই, তরুণ প্রজন্মের কাছেও গঞ্জিকাসেবন খুব ‘সাধারণ’ ব্যাপার। আর শুধু তাই নয়, এই গাঁজার ধর্মীয় রূপ ‘ভাং শরবত’ কিন্তু শিবরাত্রি থেকে দুর্গাপুজোর ভাসান, দোল থেকে কুম্ভমেলার প্রধান আকর্ষণ। ‘ভাং’ বিনোদনের জন্য পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ভারতবর্ষের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক প্রেক্ষাপটে গাঁজার ব্যাপকতা আজও চোখে পড়ার মতো তবে কী গাঁজা শুধু হিন্দুদের জন্যই এত বিখ্যাত? একদমই তা নয়। গাঁজার সুখ্যাতি সব ধর্মের মানুষদের মধ্যেই আছে। তা সে ইসলামিক সুফি হোক, চাইনিজ দাও ধর্মাবলম্বী হোক, খ্রিস্ট ধর্মের মানুষ হোক কিংবা জামাইকার রাস্তাফারিয়ানস— গাঁজার ধোঁয়া সর্বত্র বিরাজমান। অখন্ড বাংলায় গাঁজার চল বহুযুগ ধরে। বাংলার আদি সংস্কৃতি বাউল-ফকিরদের সাধনার একটা অঙ্গ গাঁজা। বড় কলকে নিয়ে গোল হয়ে বসে, দল বেঁধে গঞ্জিকাসেবন ছিলো তাদের প্রধান বিনোদন। ভারতে, বাংলাদেশে এমনকি পাকিস্তানেও পূজার সময় বা বিভিন্ন সাধু পুরুষদের জন্ম-মৃত্যু তিথির অনুষ্ঠানে গাঁজার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়।
গাঁজা হলো বিশ্বের অন্যতম অর্থকরী ফসল
গাঁজাকে বলা হয় মাল্টিবিলিয়ন ডলার ক্রপ। এ গাঁজা চাষ করে বিভিন্ন দেশ বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে। ২০১৫ সালে গাঁজা চাষে ব্যাপক বিনিয়োগ করে মাইক্রোসফট। এছাড়া বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে এ গাঁজা চাষে। ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াজুড়ে ব্যাপক হারে গাঁজা চাষ হচ্ছে।
গাঁজাকে বলা হয় মাল্টিবিলিয়ন ডলার ক্রপ
মাদক ও বিনোদনের মাধ্যম গাজা
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ও আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, ভাং ও গাঁজা সেবনে ফুসফুসের ক্ষতি তামাক পাতায় প্রস্তুত সিগারেট পানের চেয়ে কম। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেভিন হিলের মতে, গাঁজা অন্যান্য নেশাদ্রব্যের চেয়ে ভালো।
তিনি অনেক পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, যারা গাঁজা সেবন করেন তারা পরবর্তীকালে গাঁজাই খোঁজেন। এদের সাধারণত অ্যালকোহল কিংবা অন্য মাদকে আসক্ত হতে দেখা যায় না। তার দাবি, ৮০ শতাংশ গাঁজাখোর শুধু গাঁজা সেবনেই সন্তুষ্ট থাকেন। তিনি বলেন, অন্যান্য নেশার থেকে ঢের ভালো গাঁজা। তাই আপনার কোনো পরিচিতকে গাঁজা খেতে দেখলেই ভয় পেয়ে যাবেন না। আর যাই হোক তিনি গাঁজাতেই সন্তুষ্ট থাকবেন, অন্য মাদকদ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়বেন না।
সাধারণত গাঁজা সেবনের পর মনে এক ধরনের আনন্দ দেখা দেয় সাধারণত গাঁজা সেবনের পর মনে এক ধরনের আনন্দ দেখা দেয়। এ কারণে এটা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
আমেরিকার এক অবসরপ্রাপ্ত রাজ্যপ্রধান পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গাঁজা খেয়ে অপরাধ করছে, এমন মাদকাসক্ত আমার কর্মজীবনে পাইনি। তবে অ্যালকোহলের কারণে মানুষ প্রচুর অপরাধ করে।
গাঁজার অন্যান্য ব্যবহার
ফ্রান্স ও আমেরিকায় নির্মাণসামগ্রীতে গাঁজা গাছের চূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে, যা কংক্রিটের চেয়ে টেকসই ও আর্দ্রতা শোষণ করে। গাঁজা গাছ থেকে কাগজের উৎপাদন করা হয়। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সময় আমেরিকায় প্রথম গাঁজা গাছের ওপর ভিত্তি করে কাগজের মিল স্থাপিত হয়। আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের কাগজ গাঁজা গাছ থেকে উৎপাদিত। বর্তমানে গাঁজা গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি কাগজ উৎপাদন করে চীন।
১৯৬০-এর দশকে গাঁজার আঁশ দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ফোর্ড গাড়ির গ্লাস ও বডি প্রস্তুত করা হয়। এটা ধাতু ও কাচের চেয়ে ১০ গুণ শক্তিশালী, কিন্তু চাহিদানুযায়ী জোগানস্বল্পতার জন্য এটি ব্যাপক উৎপাদনে কাজে লাগানো যায়নি। গাঁজা থেকে তেল, মলমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলো ব্যাপক হারে বিক্রি করছে। এছাড়া ডিজেলের আবিষ্কারক রুডলফ ডিজেল প্রথমে গাঁজার তেল দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গবেষণা শুরু করেন।
বাংলাদেশ ও ভারতে গাঁজা নিষিদ্ধ কেন?
বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষদের গঞ্জিকাসেবন নিয়ে প্রথম আপত্তি তোলে ইউরোপিয়ানরা। এটা অনেক আগের কথা। তারপর ষোড়শ শতকে পর্তুগিজরা ও সপ্তদশ শতকে ব্রিটিশরা সকলেই ভারতীয়দের ভাং ও গাঁজার বহুল ব্যবহার নিয়ে বিস্তর লেখালিখি করে। কিন্তু ব্রিটিশরা ভারতীয়দের স্বাস্থ্যরক্ষার অছিলায় সর্বপ্রথম ভাং, গাঁজা, চরসের ওপর ট্যাক্সের কোপ বসায়। ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৭৯৮ সালে এটা করা হয়। তারপর উনিশ শতকের গোড়া অবধি বারংবার গাঁজাকে বেআইনি ঘোষণা করার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু ১৯৬১ সালের নার্কোটিক ড্রাগস বিষয়ক অধিবেশনে, গাঁজারবেআইনিকরণের প্রতি ঢিলেমি দেখানোর কারণে ভারতবর্ষের প্রতিনিধিরা একটা বড়সড় ধাক্কা খায়।
গত বছর অগস্টে ভারতের সেন্টার ফর লিগাল পলিসির প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই সময় আমেরিকায় যেসব ড্রাগসবিরোধী কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তা মূলত ছিল আফ্রো-অ্যামেরিকান ও হিসপ্যানিক গোষ্ঠীভুক্ত কালো চামড়ার মানুষদের হেনস্থা করার প্রোপাগান্ডা। কিন্তু আমেরিকার এ লোকদেখানো প্রোপাগান্ডার ফলে ভারত-সহ অন্যান্য দেশের ওপর ক্রমেই আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে। ফলে ১৯৮৫ সালে নার্কোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রোপিক সাবস্টেনসেস অ্যাক্ট বা এনডিপিএস অ্যাক্টের মাধ্যমে গাঁজা ও চরসকে সম্পূর্ণরূপে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও ভারতে গাঁজার জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি। ২০২০ সালে এনডিডিটিসি ও এইমসের যৌথভাবে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষের প্রায় ৮০ লাখ মানুষ প্রবলভাবে গাঁজার নেশায় আসক্ত।
মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশেও ১৯৮৪/৮৫ সালের আগে প্রকাশ্যে সাইনবোর্ড দিয়ে গাঁজা বিক্রি করা হতো। আলাদা লাইসেন্স নিয়ে বেচাকেনা চলতো। সস্তা জনপ্রিয়তার পথিকৃত রাষ্ট্রপতি এরশাদ তার ক্ষমতাবলে আইন করে রাতারাতি গাঁজা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এরশাদের অধীনে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৭ সালে গাঁজা চাষ নিষিদ্ধ করেছিল এবং ১৯৮৯ সালে এর বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল। বাংলাদেশে গাঁজা নিয়ন্ত্রণকারী বর্তমান আইন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ হিসেবে পরিচিত।