পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিদর্শকের ঘুষ গ্রহন; শিক্ষা ভবনে দুদকের অভিযান
সাগর চৌধুরীঃ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা-এর শিক্ষা পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মিনিস্ট্রি অডিটের নামে ২০০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর পুরো একমাসের বেতনের অর্ধকোটি টাকা ঘুষ হিসাবে নেওয়ার অভিযােগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সিলভিয়া ফেরদৌস (দলনেতা) ও মো: আবুল কালাম আজাদ এর সমন্বয়ে গঠিত টিম ১২.০৫.২০২২ তারিখে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে।
এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে শিক্ষা ভবন পরিদর্শন করে। সেখানে দায়িত্ব প্রাপ্ত পরিচালক এর অনুপস্থিতে যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার এর সাথে অভিযােগের বিষয় নিয়ে আলােচনা করা হয়।
সেই অভিযােগের বিষয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রাহ প্রক্রিয়া চলমান আছে। কোন প্রকার ঘুষ প্রদান করা হয়েছে কি না তা যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবে দুদক টিম।
দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র বলছে, যশোরের মণিরামপুর পৌর শহরের মণিরামপুর মহিলা আলিম মাদ্রাসা, হাজরাকাঠি মহিলা আলিম মাদ্রাসা, ডুমুরখালি দাখিল মাদ্রাসা, মনোহরপুর দাখিল মাদ্রাসা, বালিধা-পাঁচাকড়ি দাখিল মাদ্রাসা, রোহিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাজীআলী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দেলুয়াবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ সহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে অডিট করবে জানিয়ে মার্চ মাসের শুরুতে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। যশোর জেলা ও মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে পাঠানো চিঠিতে, অডিটে নিযুক্ত কর্মকর্তাকে সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়।
পরে অধিদপ্তরের পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তা ড. এনামুল হক যশোরে এসে একটি রেস্ট হাউজে ওঠেন এবং শিক্ষা অফিসের কর্মচারীদের মাধ্যমে ওই ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে রেস্ট হাউজে দেখা করতে বলেন। এরপর কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ড. এনামুল হকের সঙ্গে দেখা করে অডিটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেন। অডিটে তার দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ২০০ শিক্ষক-কর্মচারীর মূল বেতন স্কেলের পুরো টাকা ঘুষ হিসেবে নেন ওই কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে কঠোর গোপনীয়তার নির্দেশ থাকলেও কষ্টার্জিত বেতনের পুরো টাকা ঘুষ দিয়ে মনকষ্টে শিক্ষকরা বিষয়টি নিজেদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু করেন, যা আস্তে-আস্তে আশপাশের শিক্ষকদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রতিষ্ঠান-প্রধানের কথায় ইচ্ছা না থাকলেও ঝামেলার ভয়ে বেতনের টাকা ঘুষ হিসেবে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব মেনে নেন সবাই।