পাঁচ জেলার ডিসি ও পরিবেশ অধিদফতরের ডিজিকে হাইকোর্টে তলব
সাগর চৌধুরীঃ বায়ুদূষণ রোধে আদালতের আদেশ অমান্য করায় ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তলব করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে তাদের আগামী ১৭ মে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রিটকারী সংগঠন এইচআরপিবি’র আদালত অবমাননার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহি উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) এর আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিম ইসলাম রাজু।
পরে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ওই পাঁচ জেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধ ও বায়ুদূষণ রোধে হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেননি ৫ জেলার ডিসি ও পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। আদালত মামলার শুনানি নিয়ে তাদের তলব করেছেন।
ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ বন্ধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। এরপর ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কয়েকদফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
ওই রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়েকটি নির্দেশনা দেন। সেগুলো হলো—বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন হওয়ার পরে তাদের মতামত বিবেচনা করে বায়ুদূষণ বন্ধ করতে ঢাকা শহরে পরিবহন গাড়িতে, নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালি/বর্জ্য ঢেকে রাখা, সিটি করপোরেশন কর্তৃক রাস্তায় পানি ছিটানো, রাস্তা খোড়াখুড়ি কাজে টেন্ডারের শর্ত পালন নিশ্চিত করা, কালো ধোঁয়াবাহী যানবাহন জব্দ করা এবং অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করা।
তবে সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করা হয়। ওই আবেদনের সঙ্গে ঢাকা শহরের বর্তমান দূষণের মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ের অবস্থান এবং অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা সম্পর্কে মিডিয়ার সংবাদ সংযুক্ত করে ৪ দফা নির্দেশনা চাওয়া হয়।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আদালতের দেওয়া একাধিক নির্দেশনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না থাকায় ৫ জেলার জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি জেলাগুলোর অবৈধ ইটভাটার তালিকা দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। সে আদেশের ধারাবাহিকতায় ডিসি ও তাদের প্রতিনিধিরা আদালতে যুক্ত হয়ে তাদের বক্তব্য পেশ করেছিলেন।
এরপর আদালত তার নির্দেশনায় উক্ত পাঁচ জেলায় বায়ুদূষণ রোধে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে সেসব নির্দেশনা পালনের ব্যর্থতায় তাদের সশরীরে আদালতে হাজির হতে বললেন হাইকোর্ট।