জীবন দর্শন জীবন প্রবাহ ধর্মের সূত্রপাত – শাহানা সিরাজী

Picsart_22-04-05_20-40-47-586.jpg

জীবন দর্শন জীবন প্রবাহ ধর্মের সূত্রপাত – শাহানা সিরাজী

আলেম ওলামাদের ওয়াজ কতোই তো শোনেন। আমি সে অর্থে কিছুই না। সাধারণ মানুষ।কিন্তু কোরান, হাদিস এবং দর্শন প্রায়শ পড়ি। কিছু দিন আগে সুরা ফাতেহার আধুনিক অনুবাদ তাফসীর শুনলাম একজন ইংরেজ মুসলিম মাওলানার কাছে। তা ছিলো অসাধারণ। যুগোপযোগী।

বেদের বয়স সবচেয়ে বেশী। মানুষের আজকের অবস্থা একদিনে আসেনি। বিবর্তনের মাধ্যমেই এখানে এসেছি।
এখনো কত পার্সেন্ট মানুষ জীবন- জীবন দর্শন জীবন প্রবাহ ধর্মের সূত্রপাত ইত্যাদি সম্পর্কে জানে? আলেমেরা যা বোঝায় জনগন তাই বোঝে। প্রকৃত রিসার্স কয়জনে করে!

আসল কথায় আসি-
প্রতিটি ধর্মেরই বেশ কিছু বাহ্যিক দিক আছে। তেমনি লেটেস্ট ধর্ম ইসলামের বাহ্যিক দিক হলো – কালিমা নামাজ রোজা সামর্থ থাকলে হজ যাকাত।

এখন রোজার মাস। রোজার আধ্যাত্মিক গুরুত্ব আলেমেরা জানেন আমি এখানে সামাজিক গুরুত্ব বা বাস্তবতা সম্পর্কে কয়েকটি কথা তুলে ধরবো। আমার সাথে সহমত পোষণ দরকার নেই। কারণ তাফসীর অতীতে যারা করেছেন তাদেরকে অনেকে গ্রহণ করেনি। আমি তো মাত্র আর্থ- সামাজিক এবং স্বাস্থ্যগত দিকের কথা বলছি।

রোজা মানে সংযম,
১. সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত না খেয়ে থাকা।

২. মিথ্যা, অসততা পরিহার করা।

৩. সুদ ঘুষ দুর্নীতি পরিহার করা।

৪.ঝগড়া, ক্যাচাল,ছোগলখুরি, গীবত পরিহার করা।

৫. চোখের শালীনতা,মুখের, কানের,ঠোঁট,জিহবা,হাত পা প্রতি অঙ্গের শালীনতা বজায় রাখা।

৬. দুঃখীজনের পাশে থাকা,রোগীর সেবা করা, ঘর বাড়ি রাস্তাঘাট পরচ্ছন্ন রাখা।

৭. সুব্যবহার করা।

৮, কর্মচারীদের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক এবং তাদের কষ্ট কমিয়ে দেয়া।

৯. ক্রীতদাসকে মুক্তি দেয়া।

১০. পরিবারের সদস্য,আত্মীয়,প্রতিবেশীর হক আদায় করা।

১১. ব্যবসা বাণিজ্য, চাকুরী সব কিছুতে সততা এবং সঠিক দায়িত্ব পালন করা।

১২. অপর ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এবং সুব্যবহার করা।

১৩. যে কাজ থেকে রুটি রুজি হয় সে কাজ ১০০% সততার সাথে করা।

১৪. বদচিন্তা এবং কুফরীচর্চা( তাবিজ-কবচ) থেকে বিরত থাকা।

১৫. একে অপরকে চিন্তার,কাজের, বলার স্বাধীনতা দেয়া এবং অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করা।
দেখুন এ কয়টি কাজ যদি সঠিক ভাবে পালন করি তাহলে আমাদের পরিবার সমাজে শান্তি না এসে পারে না।

যখন সবাই সবার সামর্থ নিয়ে এগিয়ে আসে অর্থনৈতিক মুক্তিও আসে,

সারা দিন রোজা রেখে ইফতারে সামান্য আহারের কারণে মানুষের অতিরিক্ত চর্বি ঝরে যায়, হার্ট ভালো থাকে,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অন্যান্য হাঁটু,কোমর ব্যথা কমে যেতে বাধ্য।

কিন্তু আমরা ঘটাই সব উলটো। আমরা পাওয়ার জন্য হাত পাতি দিতে চাই না।
কী লজ্জা! রোজাও আমাদের শুদ্ধ বানাতে পারে না!

মহান প্রভু,মানুষের আজাইরা আবেগ কেড়ে তাদেরকে তুমি বাস্তববাদী হওয়ার তৌফিক দাও। তুমি সর্বত্রই বিরাজমান।

শাহানা সিরাজী
কবি, প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top