প্রত্যেক বিভাগে হবে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Picsart_22-02-09_09-46-31-748.jpg

প্রত্যেক বিভাগে হবে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধান প্রতিবেদকঃ দেশের প্রতিটি বিভাগে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার গড়ে তোলা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের আটটা বিভাগের মধ্যে চার-পাঁচটা কাজ আমরা পাস করে দিয়েছি। আইন পাস করা হয়েছে। বাকিগুলো আমরা করব। প্রত্যেক বিভাগে এটা করব। যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা আরও ভালো শিক্ষা নিতে পারে। জ্ঞান অর্জন করতে পারে।’

আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ২০২২) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, এনএসটি ফেলোশিপ’ এবং ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

দেশে চলমান বড় বড় প্রকল্পে কাজ করার মাধ্যমে দেশে অনেক দক্ষ প্রকৌশলী ও কর্মী গড়ে উঠেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে আমরা যে টানেল বা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতুর মতো বড়-বড় প্রকল্প করছি। এখানে আমাদের বহু ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে বহু কর্মী কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের দক্ষ জনবল সৃষ্টির পাশাপাশি জ্ঞানার্জন হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক থেকে শুরু করে যা তৈরি করছি- এর ফলে অন্তত আমাদের ছেলে-মেয়েরা কারিগরি জ্ঞান অর্জন করছে। তাদের আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দিনের বাংলাদেশ অর্থাৎ ৪১ এর উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে। কীভাবে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। আমরা আমাদের দেশকে এমনভাবে করতে চাই প্রযুক্তিনির্ভর, সবাই যেন প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হয়।’

সরকার প্রধান বলেন, সরকার করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। কোভিড আমরা নিয়ন্ত্রণ করেছি। বাংলাদেশের আজ ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। যারা বাকী আছে সবাইকে টিকা নিতে হবে। আগে আমি দেখেছি অনীহা, এখন আমি দেখছি মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে।

১২ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেওয়া যায় কিনা সেদিকটি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ পরিকল্পনায় এগিয়ে গেলে বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ব-দ্বীপ। এ বদ্বীপটা যেন জলবায়ু পরিবর্তনে হাত থেকে রক্ষা পায়, আমাদের প্রজন্মের জন্য বাঁচতে পারে সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করে দিয়ে গেলাম। যে কাঠামো তৈরি করে দিয়েছি যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা যদি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে কেউ আর কোনদিন দাবায়ে রাখতে পারবে না।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমাদের শিক্ষার জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন, এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এজন্য তিনি (বঙ্গবন্ধু) একটি কমিশন গঠন করেন। শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়নের জন্য তিনি ড. কুদরত-ই-খুদাকে বেছে নিয়েছিলেন। আপনারা দেখেন, তিনি বিজ্ঞানকে কতটা গুরুত্ব দিতেন যে শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য তিনি একজন বিজ্ঞানীকে বেছে নিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা সরকার এসেছিল তারা শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়নি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, সে সময় দেশের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট, অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। পঁচাত্তরে যখন আমার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হলো। আমি এবং আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। আমরা ছয় বছর রিফিউজি হিসেবে দেশের বাইরে ছিলাম। আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়, আমি বাংলাদেশের মানুষের কথা চিন্তা করে আমার ছোট বাচ্চাদের রেখে দেশে ফিরে আসি। এমন একটি দেশে ফিরে আসি যেখানে আমার মা-বাবা, ভাই-বোনদের খুনিরা ছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় পঁচাত্তরের পর জিয়াউর রহমান তাদের মুক্তি দেয়। তাদের উপদেষ্টা বানায়, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বানায়।’

তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছর আমার বাবা সংগ্রাম করে, নিজের জীবনকে বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করেছেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে লাখো শহীদের রক্ত দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আজকে আমরা মাতৃভাষায় কথা বলি। এই মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকারও তিনি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি করা, এই বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু শিক্ষাগ্রহণ করবে, প্রতিটি পরিবার শিক্ষিত হবে, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে এটাই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top