বরখাস্ত ডিআইজি পার্থ গোপাল কারাগারে
আদালত প্রতিবেদকঃ ঘুষ গ্রহণ ও অর্থপাচার আইনে করা মামলায় বরখাস্ত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে বিচারক আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর এক আদেশে পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল করে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এছাড়া ঢাকার বিশেষ জজ পার্থ গোপালের মামলাটি বিচারের জন্য আদালত-৫ থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ বদলি করেন। আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেছেন উচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে মামলার প্রত্যেক রায় ও আদেশ উন্মুক্ত আদালতে দিতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনকে সতর্কও থাকতে বলেছেন।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেদিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই বাসা থেকে নগদ ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরদিন ২৯ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সাবেক কারা উপমহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিক সরকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এসব টাকা তার নামে কোনো ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে বিদেশে পাচারের উদ্দেশে নিজ বাসস্থানে লুকিয়ে রেখে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
গত বছরের ২৮ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডির ভূতের গলিতে পার্থ গোপাল বণিকের নিজ ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফ বলেন, তার ঘোষিত আয়কর ফাইলে এ টাকার উল্লেখ নেই। এই টাকা অবৈধ আয় থেকে অর্জিত বলে দুদক প্রমান পেয়েছে। তবে ডিআইজি পার্থ দাবি করেন, ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এরমধ্যে ৩০ লাখ টাকা শাশুড়ি দিয়েছেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা তার সারাজীবনের জমানো টাকা।