সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়লেও কমেনি দুর্নীতি – দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার
বুরো প্রতিনিধিঃ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়লেও দুর্নীতি কমেনি বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ধারণা ছিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্থকষ্টে থাকলে দুর্নীতি করবে। সেই ধারণা থেকেই তিনি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাই পে-স্কেল প্রদান করেন। এরপরও দেশ থেকে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হয়নি।’
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় পর্যায়ের সব কর্মকর্তা ও রাজশাহী মহানগর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির এক মতবিনিময় সভা তিনি এ কথা বলেন।
আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন দেখেছিলেন, চতুর্দিকে শুধু বঞ্চনা আর বঞ্চনা। তিনিও একটি দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু এক সময় ঘাতকরা তাকেই হত্যা করেছিলেন। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দুর্নীতি একটি ঘৃণিত কাজ। দুর্নীতি থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘করোনাকালে বিভিন্ন ত্রাণ-সামগ্রী নিয়ে কত রকমের দুর্নীতি হয়েছে তা কল্পনা করা যায় না। এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আপনারা যে যেখানে আছেন, সেখান থেকেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান। দুর্নীতি ঢেকে রাখা যায় না। যেখানে পাবলিকের যাতায়াত বেশি, সেখানেই দুর্নীতি বেশি। আপনাদের সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
দুদক সচিব বলেন, ‘আমাদেরকে নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গির প্রবণতা দূর করতে হবে। ১৭ কোটি মানুষের জন্য ২৫০-৩০০ লোক কাজ করে দুর্নীতি কমানো যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন নিজে নিজেই পরিশুদ্ধ হওয়া। সামান্য ৫০ হাজার টাকার একটি দুর্নীতি মামলার জন্য ২০-৩০ লাখ টাকার মামলায় লড়তে হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনও লোক আপনাকে বলবে না যে, আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ আছে। তারা নিজে নিজেই সাবধানতা অবলম্বন করেন। মনে রাখতে হবে দুর্নীতি করে শুধু পাপের ভাগীদার হতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে পারলে আমরা অনেক দুর এগিয়ে যেতাম। আমরা দুর্নীতি নিয়ে অনেক কাজ করি। আপনারা দুর্নীতি করে টাকা রাখতে পারবেন না। দুর্নীতি করে শুধু ছেলে মেয়েদের কাছে অপমানিত হতে হয়।’
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, কর্নেল সাব্বির আহমেদ, বিজিবি, বর্ডার গার্ড, বাংলাদেশ এবং রাজশাহী বিভাগের সব সরকারি কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।