আদম -৪ – শাহানা সিরাজী
গাছে ফল ধরলে কে না খেতে চায়!
বরই পেকে আছে কে না ঢিল ছুঁড়তে চায়!
অথচ সে গাছ লাগানো,যত্নাত্তি করে বড়ো করা
গরু ছাগলের চোখ ফাঁকি দেয়া
সার দেয়া,পানি দেয়া,দীর্ঘ সময় শ্রম দেয়া – কতো যে কষ্টের তা ঢিল ছোঁড়াকার কী ভাবে বুঝবে!
টসটসে পেয়ারা জিবে জল আসবেই-
কে গাছ রোপন করে কে তার ফল খায়!
চিবিয়ে চিবিয়ে রস বের করে আর তারই জাত গোষ্ঠি উদ্ধার করে-” ইদাগুজা “একটা বেজম্মা অন্যের জায়গায় গাছ লাগিয়ে নিজের দাবী করে!
আপনি সেই “ইদাগুজা”র কাজ করে যাচ্ছেন নিরলস
যাদের জন্য করছেন তারাই আপনাকে ‘বেজম্মা’গালি দিয়ে নির্বাসনে রেখে গোপনে কামড় বসায়।তারপর ঘোমটা দিয়ে, লুঙি উঁচিয়ে মাথা ঢেকে বলে ছিঃ!
মস্তিষ্কের শঠতায় যতোটা এ জাতীয় মানুষ ঋদ্ধ
ঠিক ততোটাই কাল্প্রিট
যতোটা বাইরে ছিঃ বলে ভেতরে ততোটাই উল্টোপথে চলে…
একদিন সময় আসবে
আপনাকে হারিকেন দিয়ে খুঁজবে!
মানুষের ভেতর-বাহিরের দ্বন্দ্ব চিরকালীন
প্রকাশ ভিন্ন হলেও
আদম-হাওয়া একই কাজই করে!
তাই আদম সর্বশান্ত হয়েও বলে
এ আমার, আমারই
এ ছাড়া পাখি ডাকে না ফুল ফোটে না
আতর সুরভিত হয় না!
আদম হোক ইমাম কিংবা ঠাকুর
ভিক্ষু কিংবা সন্তু
পোপ কিংবা ধোপ
হাওয়ার হাতে পানের খিলি দিয়ে বলে-
টাকা পকেটে রাখো
আজ আমার দিন
আনন্দ পেতে দাও-
হাওয়া স্মিত হেসে বলে-
আচ্ছা ফোন দেবো
চা-বিস্কুট খেয়ে যাবে!
আদম ততোদিক গভীরতায় আচ্ছন্ন
ঈশ্বরের কাছে মাথা খুঁড়ে বলে
আমার বেহেশত চাই না
কেবল হাওয়াকেই পেতে চাই!
শাহানা সিরাজী
ইন্সট্রাক্টর (সাধারণ)
পিটিআই মুন্সীগঞ্জ
কবি প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক।