নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ দিতে বললেন হাইকোর্ট
আদালত প্রতিবেদকঃ মোবাইল কোর্টের (ভ্রাম্যমাণ আদালত) ক্ষমতা কখন, কীভাবে প্রয়োগ করতে হবে সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা দিতে সারাদেশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) নেত্রকোনায় দুই শিশুকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা সংক্রান্ত মামলার শুনানিকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘আমি যতটুকু নিউজ পড়ে জেনেছি, নেত্রকোনায় ম্যাজিস্ট্রেট রাজিয়া সুলতানা তার চেম্বারে বসে সাজা দিয়েছেন। এভাবে কি সাজা দিতে পারেন?’
আদালত বলেন, ‘মিস্টার অ্যাটর্নি জেনারেল সব দিক আপনাকে দেখতে হবে। আপনি দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল। আইনের কীভাবে প্রয়োগ হচ্ছে। এটা আপনার দেখা উচিত।’
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মাই লর্ড আমি তো এ বিষয়ে কিছু জানি না।’
আদালত বলেন, ‘অন দ্যা স্পটে গিয়ে মোবাইল কোর্ট সাজা দিতে পারে। কিন্তু উনি তো চেম্বারে বসে সাজা দিয়েছেন।’
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেলও বলেন, ‘ইয়েস, স্পটে (যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে) সাজা দিতে পারেন।’
আদালত বলেন, ‘চেম্বারে বসে সাজা দেওয়া কোনো সুযোগ নেই। থানায় বসেও সেটা করার সুযোগ নেই। এ ঘটনা শুধু নেত্রকোনাতে ঘটেনি। পত্র পত্রিকায় দেখি এ রকম আরও ঘটনা ঘটেছে, হয়ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু দেখা যায়, ঘটনার দুই তিন দিন পরে গিয়ে মোবাইল কোর্ট সাজা দিচ্ছে। এ রকম ঘটনাও ঘটছে। কিছুদিন আগে বরগুনার এক ব্যক্তিকে দুই তিন পরে গিয়ে মোবাইল কোর্টে সাজা দেওয়া হয়েছে। মোবাইল কোর্টের স্পিরিট কিন্তু এটা না। এ বিষয়টা আপনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বলুন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের যে ট্রেনিং হয়, সেখানে মোবাইল কোর্টের পাওয়ার কীভাবে প্রয়োগ করতে হবে তা যেন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আপনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে কথা বলুন।’
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘মাই লর্ড আমি এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে কথা বলব।’
এরপর আদালত নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশ দেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ব্যাখ্যা দাখিলের পর এক কপি ২৬ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ সময় আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।