জেলা প্রতিনিধিঃ বেঁধে দেওয়া তারিখের তিন মাসেরও বেশি সময় পর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।
বুধবার (২৩ জুন) দুপুরে দুদকের বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে হাজির হয়ে নিজের সম্পদের বিবরণী জমা দেন এ সংসদ সদস্য। এর আগে, চলতি বছরের ৭ মার্চ তাকে নোটিশ দেওয়া হয়। সেখানে ১৪ মার্চের মধ্যে দুদকের বগুড়া কার্যালয়ে হাজির হয়ে সম্পদের প্রাথমিক হিসাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ১৪ মার্চ সেখানে গিয়ে কাগজপত্র ঠিক করতে সাত দিনের সময় নিয়েছিলেন তিনি। এরপর আজ হিসাব জমা দিলেন।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, সংসদ সদস্য স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে সম্পদের হিসাব জমা দিয়ে গেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।
তবে ফোন না ধারায় এ সংসদ সদস্যের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনটি খালেদা জিয়া পরিবারের বলেই পরিচিত হলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীকে জয়লাভ করেন।
জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় বাৎসরিক আয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা দেখান তিনি। মাসিক হিসাবে ৪১৭ টাকা আসে। এদিকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে। আগে পুরাতন মোটরসাইকেলে চলাফেরা করলেও সংসদ সদস্য হওয়ার দুই মাসের মাথায় ৩৪ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি কেনেন।
গাড়ি কেনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে রেজাউল করিম দাবি করেন, বন্ধুরা তাকে গাড়িটি উপহার দিয়েছেন। পরে অভিযোগ ওঠে, অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটভাটা রক্ষায় মালিকরা তাকে গাড়ি কিনে দিতে বাধ্য হন। এছাড়া এ সংসদ সদস্য ২০২০ সালের অক্টোবরে পিস্তল হাতে ছবি ফেসবুকে শেয়ার করলে তা ভাইরাল হয়।
রেজাউল করিম বাবলু নির্বাচনী হলফনামায় যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছিলেন এর চেয়ে অনেক বেশি সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বগুড়ায় নির্মাণাধীন বহুতল বাড়ি, ঢাকায় ফ্ল্যাট, ব্যক্তিগত ৩-৪টি গাড়ি কেনার তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে শুল্কমুক্ত একটি বিলাসবহুল পাজেরোও আছে।
সম্প্রতি বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সূত্র ও পত্রিকার প্রতিবেদনে সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা মিললে গত ৭ মার্চ এক নোটিশে তাকে ১৪ মার্চ বেলা ১০টায় বগুড়া জেলা কার্যালয়ে তলব করা হয়। ওইদিন তার ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব চাওয়ার কথা ছিলো। সেদিন ২টার দিকে কার্যালয়ে হাজির হন এ সংসদ সদস্য। এ সময় তিনি তার সম্পদের হিসাব দাখিলের জন্য কাগজপত্র ঠিক করতে সাতদিনের সময় প্রার্থনা করেন। তার আবেদন মঞ্জুর করা হয়।