ভোলার দৌলতখানে ইউপি মেম্বারের হাত-পা ভেঙে দিলেন ইউএনও
অপরাধ প্রতিবেদকঃ ১লা মার্চ থেকে চলমান মৎস্য অভিযানে মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় ভোলার দৌলতখানে ভাইয়ের জন্য সুপারিশ করতে আসা এক ইউপি মেম্বারকে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওছার হোসেনের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। বিচার দাবিতে ইউপি মেম্বার পরিষদ আলটিমেটাম ঘোষণা করছে।
এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানরাও।
সোমবার বিকাল থেকে একই দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন স্থানীয়রা।
তারা ইউএনওর অপসারণ দাবি করেন। মঙ্গলবারও ওই এলাকায় উত্তেজনা চরমে রয়েছে।
এরআগে রোববার দিবাগত রাতে দৌলতখান ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওছার হোসেন বলেন, গত রোববার রাত ১২টায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ। সেই সময়ে মেঘনা নদীতে অভিযান চালান তিনি। ওই সময় একটি বড় মাছ ধরা ট্রলারকে ধাওয়া করে জব্দ করা হয়। ওই ট্রলারে ইউপি মেম্বার আব্দুল মতিনের ভাই মনির ছিল। তাকে আটক করে ঘাটে নিয়ে আসা হলে, মেম্বার মতিন লোকজন নিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিতে জড়ো নন।
এ সময় পুলিশ ধাওয়া করলে, মতিন সিসি ব্লক বাঁধের ওপর পড়ে আহত হন। তাকে কেউ মারধর করেননি।
অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন ভবানীপুর ইউপি মেম্বার আব্দুল মতিন জানান, তার ভাই লক্ষ্মীপুর থেকে ট্রলারে দৌলতখানে আসছিলেন। ওই সময় ইউএনও কাওছার তাদের আটক করে।
খবর পেয়ে তিনি ইউএনওকে নিজের পরিচয় দিয়ে জানান, তার ভাই মাছ ধরতে যাননি। এমনকি ওই ট্রলারে কোনো জালও ছিল না। ইউএনও তার কথায় আরও উত্তেজিত হয়ে তার বাসার ডিউটিরত আনসারের লাঠি নিয়ে বেদম মারধর করেন। তার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নবী নবু জানান, বিষয়টি অমানবিক। একজন জনপ্রতিনিধিকে এভাবে নির্যাতন করার বিষয় এলাকাবাসী মেনে নিতে না পারায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
দৌলতখান থানার ওসি বজলার রহমান জানান, ইউএনওর মৎস্য অভিযানে কোনো পুলিশ যায়নি। ইউএনও তার বাসায় পাহারার দায়িত্বে থাকা আনসারদের নিয়ে অভিযানে গিয়েছিলেন। ওই সময় সাতজনকে আটক করেন। এদের মধ্যে ছয়জন শিশু ছিল।
মেম্বার মতিনের সঙ্গে ইউএনওর ঝামেলা হয়েছে, মতিনের ভাই মনিরকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আলম খান জানান, এমন ঘটনা তারাও মেনে নিতে পারছেন না। ইউএনও নিজ হাতে এভাবে লাঠি তুলে নিতে পারেন না।
তবে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছি।
এদিকে ভোলা জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক যোগাদান করেছেন। তারপরও নতুন জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে জেলা প্রশাসনের একজন নাম প্রকাশ করার শর্তে বলেন, স্যার নতুন এসেছেন এখনো কিছু বুঝে উঠতে পারেন নি। অবশ্যই আপনার প্রশ্নের বিষয়টি (দৌলতখান উপজেলার) স্যারকে জানাব।
বরিশাল ভিবাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে, কমিশনারের অফিসের এককর্মকর্তা বলেন, স্যার মিটিংয়ে আছেন। পরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন।