প্রস্তুত চট্টগ্রাম; আগামীকাল ভোট; প্রচার-প্রচারণা শেষ, সব কেন্দ্রে ইভিএম
ভোটের জন্য প্রস্তুত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষ। আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট।
সোমবার মধ্যরাতেই শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। এখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে চলছে জয়-পরাজয়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ। ইতিমধ্যে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্নের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
উত্তপ্ত প্রচারণার পর এই সিটির ভোট নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক মতবিনিময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, চট্টগ্রামে আশ্বস্ত করার মতো নির্বাচনি পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু এবং সকলের অংশগ্রহণযোগ্য রয়েছে। নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হবে, প্রতিহিংসা যেন না হয়। হতাহতের যে ঘটনা ঘটেছে এটা কাম্য নয়। যদিও সিইসির বক্তব্যের এক দিন পর নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচনকে ঘিরে দুটি প্রাণহানি ঘটেছে। এজন্য সহিংসতার শঙ্কা ও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্নের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি সুন্দর পরিবেশে ভোট হবে। ভোটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা মোকাবিলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এই ভোটগ্রহণ হবে। প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ ভোটার ভোটদানের মাধ্যমে বন্দরনগরীর জন্য নতুন অভিভাবক নির্বাচিত করবেন। চট্টগ্রাম সিটির ভোটের পুনর্তারিখ নির্ধারণের পর থেকে নির্বাচনি মাঠে চষে বেড়িয়েছেন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী সাত জন প্রার্থী।
এবার ছয়টি রাজনৈতিক দলের ছয় জন এবং স্বতন্ত্রভাবে এক জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন—আওয়ামী লীগের মো. রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলনের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর (আম), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি)। সাধারণ কাউন্সিলর ১৭২ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর হিসাবে ৫৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চট্টগ্রাম সিটিতে ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন। এক জন মেয়রের পাশাপাশি নগরীর ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডের ৪১ জন সাধারণ কাউন্সিলর, ১৪ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন ভোটাররা। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৩৫টি এবং ভোটকক্ষ ৪ হাজার ৮৮৬টি।
গত ১৪ ডিসেম্বর ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করেন। এর আগে গত ২৯ মার্চ এই ভোটের লক্ষ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেছিল কমিশন। এর মধ্যে শুরু হয় বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। ১২ দিন ধরে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার পর করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১ মার্চ ভোটগ্রহণ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।