নাপিতের সঙ্গে ‘সুখেই ছিলেন’ চিকিৎসক প্রেমিকা, গ্রেপ্তার করল পুলিশ

নাপিতের সঙ্গে ‘সুখেই ছিলেন’ চিকিৎসক প্রেমিকা, গ্রেপ্তার করল পুলিশ

জেলা প্রতিনিধিঃ ৮-৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক তাদের। প্রেমিক পেশায় নাপিত হওয়ায় তাকে পরিবার মেনে নেবে না-এমন ভয় ছিল গাইনি চিকিৎসক মিতুর। তাই প্রেমিকের সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান। বিয়ে করে সংসার পাতেন। ওই ঘটনায় অপহরণের মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা। ২১ মাস পর ওই মামলায় গত সোমবার মিতুকে সন্তানসহ উদ্ধার ও প্রেমিক বাপ্পীকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। উদ্ধারের পর গাইনি চিকিৎসক মিতু জানিয়েছেন, নাপিত স্বামীকে নিয়েই সুখে আছেন তিনি।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার চানমিয়া হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে মিতুকে উদ্ধার করে রংপুর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মিতুর পুরো নাম আয়েশা ছিদ্দিকা মিতুকে (৩৪)। পেশায় গাইনি চিকিৎসক মিতুর বাড়ি রংপুর নগরীর সেনপাড়া এলাকায়। নগরীর আলমনগর কলোনির নাপিত রফিকুল ইসলাম ওরফে বাপ্পীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

মিতুকে উদ্ধারের পর গতকাল মঙ্গলবার রংপুর নগরীর কেরানী পাড়া এলাকায় সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, ‘গত বছরের মার্চ মাসে রংপুরে গাইনি চিকিৎসক আয়েশা ছিদ্দিকা মিতুকে অপহরণের অভিযোগে তার বাবা ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর রংপুরের কোতোয়ালি থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, নগরীর আলমনগর কলোনির নাপিত রফিকুল ইসলাম ওরফে বাপ্পি তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন।

এ ঘটনায় দীর্ঘদিন পুলিশ চেষ্টা করেও অপহৃত চিকিৎসক মিতুকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে দেওয়া হয়। সিআইডি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই ইউনুছ এরপর দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে ডা. মিতুকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত বাপ্পীকে গ্রেপ্তার করেন।

সিআইডির পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস জানান, গাইনি বিভাগের চিকিৎসক মিতু এর আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বাপ্পীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার আগের স্বামীর ঘরে একটি পুত্র সন্তান এবং বাপ্পীর ঘরেও একটি সন্তান রয়েছে। তারা অনেক দিন আগেই বিয়ে করে সংসার করে আসছিলেন বলে সিআইডিকে জানিয়েছেন। যেহেতু অপহরণ মামলা হয়েছে সে কারণে তাদের উদ্ধার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, জানতে পেরেছি, চিকিৎসক মিতুর সঙ্গে ৮-৯ বছর ধরে বাপ্পীর প্রেমের সম্পর্ক। এর আগেও একবার তারা পালিয়ে গিয়েছিলেন। অনেক বুঝিয়ে মিতুকে বাড়িতে আনা হলেও আবারও তারা পালিয়ে যান। বাপ্পী পেশায় ‘নাপিত’ হলেও তিনি মিতুর বাবার ব্যবসায় ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতেন। দুজনে ঢাকায় চলে যাওয়ার পর দীর্ঘ ২১ মাস ধরে গাইনি চিকিৎসক রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চেম্বার দিয়ে সেখানে রোগী দেখতেন। সেখানে যা রোজগার হতো তাই দিয়ে বাসা ভাড়াসহ তাদের সংসার খরচ চলতো বলে মিতু জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, ‘ডা. মিতু জানিয়েছেন, বাপ্পীর সঙ্গে ২১ মাসের বিবাহিত জীবনে তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। তারা সুখেই আছেন। বরং তার বাবা তাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top