মানবাধিকার উদ্ধার করতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে

PicsArt_12-09-08.48.13.jpg

মানবাধিকার বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা
মানবাধিকার উদ্ধার করতে হলে সবাইকে
ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার: মানবাধিকার বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্ষমতাসীনরা তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে মানুষের মৌলিক অধিকার লংঘন করছে। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সবাইকে স্বো”চার হতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে স্বো”চার হলে মানবাধিকার উদ্ধার হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।
গতকাল বুধবার সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন মিলনায়তনে মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা-মওসুস আয়োজিত “মানবাধিকারের জন্য দাড়িয়ে যাই, তার জন্য পৃথিবীর সকল মানুষের ঐক্য চাই” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এডভোকট খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রেরিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সম্পাদক ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, মওসুস চেয়ারম্যান ড. মো: গোলাম রহমান ভূইয়া। বক্তব্য রাখেন, মওসুস উপদেষ্টা এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, সাবেক এমপি তাসনিম রানা, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, মওসুস পরামর্শক এডভোকেট ইউসুফ আলী, সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সহ সম্পাদক এডভোকেট সাইফুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী আকরাম উল্লাহ প্রমুখ।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য মানুষের অধিকার খর্ব করে। দেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত হলে মানবাধিকার রক্ষা হবে। তাই মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।

রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আমরা আজ অনিয়মান্ত্রিক জগদ্দল ব্যবস্রথার অধীনে আছি। শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মানুষের বাক স্বাধীনতা, নৈতিকতা ও চিন্তা চেতনার স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। আজ এখানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নূনতম বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান নেই। সরকার রাষ্ট্রের মানবাধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। দৈনিক সংগ্রাম কার্যালয়ে ভাংচুর করে বয়োবৃদ্ধ সম্পাদককে যেভাবে অফিস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে চিত্র দেশের মানুষ দেখেছে। বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে, তার একমাত্র উদ্দেশ্য ক্ষমতায় টিকে থাকা। ক্ষমতায় টিকে থাকার ই”ছাই মানবাধিকার লংঘন।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আজ আমাদের হাত বন্ধ, মুখ বন্ধ, কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কারা এসব বন্ধ করেছে। সংবিধানে সব ধরনের অধিকার দেয়া হয়েছে কিš‘ তার বাস্তবায়ন নেই। আসকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ মাসে ৯৭৫জন নারী ধর্ষিত হয়েছে। এটা জাহেলি যুগের মতো অব¯’া। চিকিৎসা খাতের দুরব¯’া আরো করুণ। এ অব¯’া থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে সবাইকে স্বো”চার হতে হবে। তিনি মানবাধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বো”চার হওয়ার আহবান জানান।

শহিদুল ইসলাম বলেন, মানবাধিকার চুড়ান্ত সীমারেখা এবং সঠিক সংজ্ঞা এখনো নির্ণীত হয়নি। এব্যাপারে জাতিসংঘের একটি ঘোষনাপত্র থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে অধিকারের সংজ্ঞা ও প্রয়োগ পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন। পদ্ধতি যাই হোক বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ আজ অধিকার বঞ্চিত। আমরা আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো পাচ্ছি না। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো আমাদের নেই। ভোট ও ইজ্জতের অধিকার ছিনতাই হয়ে গেছে। আমাদের ছিনতাই হওয়া অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।

প্রবন্ধে ড. মো: গোলাম রহমান ভূইয়া উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে গনতন্ত্রের কথা বলা আছে। কিš‘ সবাইকে সমান চোখে দেখা দেখা হচ্ছে না। আজ সবাই ভিকটিমস, দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিষ্টটল বলেছিলেন, “রাষ্ট্রের শাসক শ্রণীর কোন সংসার থাকবে না, স্ত্রী-পুত্র থাকবে না, কারন সংসার স্ত্রী-পুত্রের মোহ ও লোভ লালসা রাষ্ট্রীয় কাজের মনোনিবেশে বিঘœ ঘটাবে।” রাজনীতিবিদরা এত বড় ত্যাগ না করুন, অন্তত সবাইকে তো আপন ভাবতে পারেন এবং এক দল আরেক দলের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ দেখাতে পারেন।

সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, মানবাধিকার কে নিয়ে যায়? আরেকজন মানুষ অধিকার নিয়ে যায়। এটা সারা দুনিয়ায় চলছে। এ জন্য সবাইকে স্বো”চার হতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে মানবাধিকার উদ্ধার করা যায়। দেশের স্বাধীনতার জন্য যেভাবে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, ঠিক তেমনি আজ সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে মানবাধিকার উদ্ধার করা সম্ভব হবে। একে অন্যের অধিকার মানলেই সবাই শান্তিতে বসবাস করতে পারবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top