চরফ্যাশনে চালের নামে প্লাস্টিক চাল বিক্রির অভিযোগ

চরফ্যাশনে নুরজাহান চালের নামে প্লাস্টিক চাল বিক্রির রমরমা ব্যবসার অভিযোগ৷

মোঃ সিরাজুল ইসলামঃ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বাজারগুলোতে, ক্রেতার সাথে প্রতারণা করে নুরজাহান চাল এর সাথে প্লাস্টিক চাল মিশিয়ে বিক্রি করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) চরফ্যাশন জাহানপুর ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান ফরাজি ও ওসমানগঞ্জ ইউনিয়ন জলিল ব্যাপারী হাটের গ্রাম্য ডাক্তার শহিদুল্লাহ’র অভিযোগের ভিত্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে৷

চাল ক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, জাহানপুর তুলাগাছিয়া বাজার জাফর স্টোর থেকে এক বস্তা নুরজাহান চাল কিনেছি প্রায় ২০ দিন পূর্বে৷ চাল গুলোর ভাত দু’রকমের৷ পানি দেয়া ভাত গুলোর মধ্যে অসংখ্য ভাত রাবারের মতো শক্ত এবং কোন স্বাদ নেই৷ এর পরেও প্লাস্টিক সন্দেহ না হওয়ায় খেয়ে ফেলেছি৷ এখনো ৫ কেজি চাল বাসায় আছে৷

তুলাগাছিয়া বাজারের জাফর স্টোরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই এ চালের ব্যাপারে অভিযোগ দিয়েছে তাই, এখন আর নুরজাহান চাল বিক্রি করছিনা৷

অন্য ক্রেতা মোঃ শহিদুল্লা বলেন, এক সপ্তাহ পূর্বে চরফ্যাশন বাজারের বাচ্চু মিয়ার দোকান থেকে দুই বস্তা নুরজাহান চাল ক্রয় করি। বাসায় ভাত রান্না করে খেতে গিয়ে দেখি ভাত দু’রকম। আমার সন্দেহ হলে ভালো করে চালগুলো দেখার পর দেখি, অর্ধেক চাল বাকি অর্ধেক প্লাস্টিকের মত। তাই এক বস্তা চাল আর কিছু ভাত চরফ্যাশন চাল ক্রয় কৃত দোকানদারের নিকট নিয়ে আসি৷

অভিযোগ প্রসঙ্গে চাল ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, চাল উৎপাদন তো আমরা করিনা। বিভিন্ন কোম্পানী থেকে আমদানি করা হয়৷ যদি চাল খারাপ বা কিছু ভেজাল দিয়ে থাকে তাহলে ক্রেতা দোকানে নিয়ে আসলে অন্য যে চাল নিতে চান আমরা দিয়ে দিব৷

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মাহাবুব কবির বলেন, প্লাস্টিকের চাল স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর৷ এটা ক্যানসার বা জন্মগত ত্রুটির কারণ হতে পারে। চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতাকে সচেতন হতে হবে৷

চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ম আ হাসনাইন বলেন, কিছু দুষ্কৃতিকারী প্লাস্টিকের চাল তৈরি করে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করতে পারে৷
তবে সুসংবাদ হলো, এই চাল চেনার উপায়ও রয়েছে উপায়গুলো হলো-
১. একমুঠো চাল নিয়ে তাতে দেশলাই বা গ্যাসলাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিন। যদি প্লাস্টিকের চাল হয়, তবে প্লাস্টিক পোড়া গন্ধ বের হবে।

২. চাল সেদ্ধ করে একটি বোতলে ভরে দু-তিন দিন রেখে দিন। প্লাস্টিকের হলে ওই সেদ্ধ চালে ফাঙ্গাস আক্রমণ করবে না।

৩. কিছু চালের মধ্যে গরম তেল ঢালুন। প্লাস্টিকের হলে ওই চাল গলে যাবে।

৪. পানি ভর্তি একটি বোতলের মধ্যে এক টেবিল চামচ চাল দিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। যদি চাল পানির ওপর ভাসতে দেখা যায়, তবে সেটি প্লাস্টিকের চাল। আসল চাল পানিতে ভাসে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top