আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

রাতভর নির্যাতনের পর কেটে দেওয়া হলো নারীর চুল
আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধিঃ এক নারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের পরে চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকা ও শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুর বিরুদ্ধে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ নির্যাতনের শিকার নারী পারভীন আক্তার (৩০) বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় কেকা ও তাপু ছাড়াও আরো চার জনকে আসামি করা হয়েছে।

আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি বাদীর সম্পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদানের আদেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সেলিনা আক্তার লাকি, আইরিন পারভীন এ্যানি, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রাখি আক্তার এবং ফাতেমা শরীফ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকার বোরহান উদ্দিন খান তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার লাকিকে এক বছর আগে তালাক দেন। পরে গত ১০ জুলাই পারভীন আক্তারকে বিয়ে করেন বোরহান। এতে বোরহানের প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবারের সঙ্গে পারভীনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী সেলিনা আক্তার লাকি, তার ভাই ঝালকাঠি শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপু ও তার সহযোগী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকাসহ ৮-১০ জন পারভীনের বাসায় যায়। এসময় তারা ঘরে ঢুকে পারভীন আক্তারকে মারধর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়।

পরে পারভীনকে জোর করে শহরের ভিআইপি সড়কের হিলটন হোটেলের একটি রুমে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুন লাগিয়ে দেয়। নির্যাতন শেষে পারভীনের চুল কেটে দেয় তারা। পরে তার কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

একপর্যায়ে পারভীনের ভাই নুরুজ্জামান হাওলাদারকে ফোন করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় আসামিরা। পরের দিন দুপুরে মুক্তিপণের টাকা দিলে পারভীনকে প্রায় অচেতন অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

মামলার বাদী পারভীন বলেন, ‘আমাকে মামলা না করার জন্য হুমকি দেয় তারা। তাদের ভয়ে আমি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে পারিনি।’

পারভীনের স্বামী বোরহান উদ্দিন খান বলেন, কেকা ও তাপুর ভয়ে আমার স্ত্রীকে সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে রাখি। সেখানে লোক পাঠিয়েও আসামিরা আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেয়।

মামলার আসামি ঝালকাঠি শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপু বলেন, আমার বোনকে শরিয়ত অনুযায়ী তালাক দেওয়া হয়নি। সে এখনো বোরহানের স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকা বলেন, পারিবারিক একটি ঘটনায় আমাকে অহেতুক জড়ানো হয়েছে।

ঝালকাঠি থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, মামলার এখনো কাগজপত্র হাতে এসে পৌঁছায়নি। আদালতের আদেশ পেলে, নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top