মা ইলিশ সংরক্ষণ – সাড়ে ৪ হাজার জেলেকে কারাদণ্ড, ২১৪ কোটি টাকার জাল জব্দ

PicsArt_09-13-07.48.06.jpg

মা ইলিশ সংরক্ষণ – সাড়ে ৪ হাজার জেলেকে কারাদণ্ড, ২১৪ কোটি টাকার জাল জব্দ

সাগর চৌধুরীঃ গত ১৮ দিনে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ৪ হাজার ৫৪৯ জন জেলেকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সময়ে ২১৪ কোটি ৩১ লাখ টাকার কারেন্ট ও অন্যান্য অবৈধ জাল জব্দ করা হয়েছে।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) পর্যন্ত মৎস্য অধিদফতরের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২০’ এর প্রতিবেদন থেকে এ সব তথ্য জানা গেছে।

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হওয়ায় গত ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ১৪ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৮ বিভাগে মোট ২ হাজার ১৩৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এ সময়ে ৩৯ টন ইলিশ এবং ৪ টন অন্যান্য মাছ আটক করা হয়েছে।

মোট ৫ হাজার ৪৪৬টি মামলা করা হয়েছে। ৬৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ৪ হাজার ৫৪৯ জন জেলেকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ২১৪ কোটি ৩১ লাখ টাকার কারেন্ট ও অন্যান্য জাল জব্দ করা হয়েছে। নৌকা ও জাল নিলামের মাধ্যমে আয় হয়েছে ১৮ লাখ টাকা।

১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস রুলস, ১৯৮৫) অনুযায়ী ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।

দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে শাস্তি দ্বিগুন হবে।

নিষিদ্ধ সময়ে সারাদেশের মাছের ঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, নৌপুলিশ, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড সহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধন ও তদারকির জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ মো. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের টিম কাজ করছে।

অপরদিকে ইলিশ সম্পৃক্ত ৩৬ জেলায় প্রশাসন এবং জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথভাবে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে কি না- হাট-বাজারে ইলিশ মাছ ক্রয়-বিক্রয় কিংবা মজুৎ ও পরিবহন হচ্ছে কি না এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় বরফকল বন্ধ আছে কি না, সে ব্যাপারে অভিযানিক এলাকা পরিদর্শন ও তদারকির জন্য মন্ত্রণালয়ের ২২ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, আড়ৎ, বাজার, সুপারশপ ও ইলিশ মাছ প্রাপ্তির সম্ভাব্য স্থানে দৈনিক নজরদারি ও অভিযান পরিচালনা এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য মৎস্য অধিদফতর গঠিত ৮টি মহানগর মনিটরিং টিম কাজ করছে।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় সার্বক্ষণিক অবস্থান করে মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত অভিযান ও মোবাইল কোর্ট এবং ভিজিএফ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও তদারকিসহ প্রতিদিন মৎস্য অধিদফতরে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ৫টি বিভাগীয় মনিটরিং টিম কাজ করছে।

বিভাগীয় মনিটরিং টিম, জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত অভিযান ও মোবাইল কোর্ট এবং জেলেদের ভিজিএফ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য মৎস্য অধিদফতর গঠিত ১০ সদস্যের কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটি কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top