ভোলায় আখের বাম্পার ফলন; ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেনা কৃষকেরা
সাগর চৌধুরীঃ আখ বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল৷ দেশের পাট ও তামাকের মত আখও চাষীদেরকে নগদ অর্থে এনে দেয়।
আজকাল পাট চাষের চেয়ে আখ চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষীরা পাটের চেয়ে আখ চাষেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতেই কিছু না কিছু আখের চাষ হয়। তার মধ্যে বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার প্রতিটি উপজেলায় আবহমানকাল ধরে থেকে আখ চাষ হয়ে আসছে।
আখ পরিবারভুক্ত ঘাস জাতীয়। একবর্ষ বা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ৷ গাছের পাতা কিছুটা ভুট্টার পাতার ন্যায় তবে অধিকতর শক্ত ও খাড়া, সুচালো ও কিনারা ধারযুক্ত। যে সকল কারণে আখ চাষ অন্য ফসলের চেয়ে একটু কষ্টসাধ্যও বটে।
ভোলা জেলার সদর উপজেলা থেকে শুরু করে প্রতিটি উপজেলাতেই আখ চাষ হয়ে আসছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর ভোলাতে আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অধিক আখ চাষ হয়েছে।
ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক হরলাল মধু বলেন, ভোলা জেলায় আখ চাষের ক্ষেত্রে ৭৩৬ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবছর প্রতি হেক্টরে ৪৮ মেট্রিক টন আখ উৎপাদিত হয়েছে। ভোলা জেলায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা বা আখ থেকে চিনি উৎপাদন না করার কারণে এই জেলায় চিবিয়ে খাওয়া আখ চাষ করা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, ভোলা জেলার আখ চাষীদের ক্ষেত্রে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সার, বীজ এবং পরিচর্যার জন্য কোন রকম সাহায্য করতে পারি না, তবে পরামর্শ দিয়ে চাষীদের সঙ্গে থাকি। আখ চাষীদের জন্য ভোলা জেলায় সরকারি কোন বরাদ্দ নেই।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। আখ উৎপাদন প্রতি হেক্টরে ৪০ থেকে ৪২মেট্রিক টন।
এভাবে এবারের ফলন তুলনামূলক ভালো হওয়ার কারণ আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। রোগবালাই কম ছিল। রেড রোড বা লাল পঁচা রোগ খুবই কম হয়েছে এবং চাষীরা আখ চাষ করতে প্রথম থেকেই সচেতন ছিল।
আমি আশা করি আগামী বছর আখের চাষ আরও বাড়বে। চাষিরা আরো বেশি লাভবান হবেন। আমরা আখ চাষীদের পরামর্শ দিয়ে তাদের সঙ্গে থাকি কিন্তু সরকারিভাবে কোনো রকম সহায়তা। আপাতত দিতে পারছিনা।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হাসনাইন বলেন, ভোলা জেলা তথা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি উপজেলা হল চরফ্যাশন। এখানে আখের ফলন ভালো হয়েছে। এখানে আখ চাষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকম সহায়তা দেয়া হয় না। এই উপজেলায় আখ -৪৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
তবে ভোলা জেলার কৃষকরা বলেন, আখের ফলন ভালো হওয়ার পরেও সঠিক দাম না পাওয়ায় সার, বীজ এবং জমিতে খরচ উঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় সরকারের সহযোগিতা দরকার অন্যথায় আখ চাষে আগামীদিন গুলোতে ভাটা পড়বে।