আখেরাতের ভয় দেখিয়ে মাদ্রাসায় ১১ ছাত্রীকে ধর্ষণ

অপরাধ প্রতিবেদকঃ আখিরাতের ভয়, মিথ্যা হাদিস ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৩ বছর যাবৎ ১১ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আরও ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা স্বীকার করেছে নারায়ণগঞ্জের দারুল হুদা মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মুফতী মোস্তাফিজুর রহমান (২৯)।

রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় র‌্যাব-১১ এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার ভূক্তভোগী ৩ শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারীতে রাখে তাকে। র‌্যাবের গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। তারপর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ভুঁইগড় দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে জসিম নেত্রকোনা লক্ষ্মীগঞ্জ কাওয়ালীকোণা গ্রামের মো. ওয়াজেদ আলীর ছেলে। সে এ দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।

সংবাদ সম্মেলনে আলেপ উদ্দীন জানান, গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সে ৩ বছর ধরে আখেরাতের ভয়ভীতিসহ নানা ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আপন দুই বোনসহ ১১ জন ছাত্রীকে মাদ্রাসায় তার কক্ষে নিয় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করে আসছিলো। কখনও আখিরাতের ভয়, হুজুরের কথা শোনা ফরজ, না শুনলে গোনাহ হবে, জাহান্নামে যেতে হবে ইত্যাদি ভয় দেখাতো। আবার কখনও তাবিজ করে পাগল করা, পরিবারের ক্ষতি করার ভয়ভীতি দেখিয়ে সে বিভিন্ন বয়সী মাদ্রাসার ছাত্রীদের ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি করতো।

এমনকি ওই মাদ্রাসা অধ্যয়নরত আপন দুই বোন ও মোস্তফিজুরের নিকটাত্মীয়ের ৮ বছর বয়সী এক শিশু যে তার মাদ্রাসায় পড়তো তাকেও একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, মোস্তফিজুর নিজেই বিভিন্ন জাল হাদিস তৈরি করে হুজুরের সঙ্গে সর্ম্পক করা জায়েজ আছে বলে ছাত্রীদের বোঝাতো।

একটি জাল হাদিসের মাধ্যমে অভিভাবক ও স্বাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয় বলে একাধিক ছাত্রীকে কৌশলে ধর্ষণ করার পর আরেকটি জাল হাদিসের মাধ্যমে তালাক হয়ে যাওয়ার ফতোয়া দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে বের করে দিত।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাফিজুর ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে র‌্যাব-১১ এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top