ডাক বিভাগের মহাপরিচালককে সরিয়ে দিতে একমত সংসদীয় কমিটি
বিশেষ প্রতিবেদকঃ গ্রামের জনসাধারণকে ডিজিটাল সেবা দেয়ার কথা বলে শত শত কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ ওঠায় এবং করোনা পজিটিভ হয়েও গণভবনে যাওয়ায় ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রকে (এসএস ভদ্র) দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে একমত হয়েছে সংসদীয় কমিটি।
এদিন কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র। তার সামনেই তাকে নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। বরং নীরবেই হজম করেছেন সবার কথা। এমনকি তার অপসারণ প্রশ্নে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীও একমত পোষণ করেছেন।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সপ্তম বৈঠকে তাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।
গ্রামের জনসাধারণকে ডিজিটাল সেবা দেয়ার কথা বলে শত শত কোটি লোপাট করেছে ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র। কেনাকাটা থেকে শুরু করে ডিজিটাল পোস্ট সেন্টার স্থাপন- সব খানে রেখেছেন অনিয়মের স্বাক্ষর। শুধু তাই নয়, বহু ডিজিটাল সেন্টারের অস্তিত্বই নেই, তবুও নাম ভাঙিয়ে তুলে নিয়েছেন ৫৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এসবই উঠে এসেছে ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত রিপোর্টে। এ নিয়ে তাকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তলবও করেছে। এ বিষয়ে চলছে তদন্ত।
অন্যদিকে গত ১৪ আগস্ট সকালে জাতির জনকের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডাটা কার্ড উন্মোচন ও বিশেষ খামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্যান্যের সঙ্গে তিনিও গণভবনে যান। অথচ সে সময় তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টেবিলে বসে উদ্বোধনী খাম, স্মারক ডাকটিকিট এবং ডাটা কার্ড উন্মোচন কাজে স্বাক্ষর করেছেন সেই টেবিলের পাশেই দাঁড়ানো ছিলেন সুধাংশু শেখর ভদ্র।
বৈঠক শেষে কমিটির এক সদস্য নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘বৈঠকে সবাই ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রকে সরিয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া করোনা রোগী হয়েও তিনি তা গোপন করে গণভবনে গেছেন। তার দুর্নীতি নিয়ে দুদক তদন্ত করছে।’
কমিটির আরেক সদস্য বলেন, ‘সংসদীয় কমিটির ক্ষোভের মুখে কোনো জবাব দিতে পারেননি ডাকের মহাপরিচালক। এমনকি তাকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে মন্ত্রীও একমত পোষণ করেছেন।’