যৌন নিপীড়ন – জগন্নাথ শিক্ষক হালিমকে বরখাস্তের দাবি

যৌন নিপীড়ন – জগন্নাথ শিক্ষক হালিমকে বরখাস্তের দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ‘লঘু’ শাস্তি দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হালিম প্রামাণিককে চাকরিতে বহাল রাখায় প্রতিবাদে নেমেছে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার দুপুরে এই শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছেন তারা।

২০১৭ সালে নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হালিম প্রামাণিকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে।

পরে তিন দফা তদন্ত শেষে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২তম সিন্ডিকেট সভায় এই শিক্ষকের শাস্তি হিসেবে পদোন্নতি স্থগিতের মেয়াদ ৮ বছর পেছায়।

পাশাপাশি শাস্তি দেওয়া হয়, আগামী ১০ বছর তিনি প্রশাসনিক কোনো দায়িত্ব পাবেন না। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের কোনো কোর্স নিতে পারবেন না। তিনি নিজের কোর্সের বাইরে অন্য কোনো কোর্সের পরীক্ষায় সম্পৃক্তও হতে পারবেন না।

তবে চাকরিতে বহাল রেখে তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়, তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী ‘ন্যায়বিচার’ পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন।

মানববন্ধনের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা আইনি পদক্ষেপের দিকে যাব। এ ব্যাপারে মহিলা পরিষদসহ নারী নির্যাতনের বিষয়ে যারা কাজ করেন, আইনগত দিক নিয়ে তাদের সাথে বসব।”

মানববন্ধন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন অভিযোগকারীরা।

অভিযোগকারী একজন শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভিসি স্যার আমাদের বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় যে শাস্তি গ্রহণযোগ্য মনে করেছে, সেটাই দিয়েছে।

“আমরা শাস্তিতে সন্তুষ্ট না থাকলে আদালতে যেতে পারি। এ ব্যাপারে উনি আমাদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।”

তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আইনি পদক্ষেপ নিব কি না, এখনও ওভাবে সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি মানবাধিকার কমিশনের সাথে কথা বলে রেখেছি। উনারা আজ-কালের মধ্যে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত জানাবেন, উনারা কিভাবে এগোতে চাচ্ছেন।”

মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

যৌন হয়রানির অভিযোগে জগন্নাথ শিক্ষক বরখাস্ত

এর আগে প্রথম দুই দফা তদন্তের পর ২০১৮ সালে হালিম প্রামাণিককে কেবল তিরস্কার ও পদোন্নতি দুই বছর বিলম্বিত করার শাস্তি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

পরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পিছু হটে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রশাসন, সেই কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে গত সোমবার নতুন শাস্তির সিদ্ধান্ত আসে ৮২ তম সিন্ডিকেট সভায়।

শাস্তির বিষয়ে সিন্ডিকেটের একজন সদস্য, অভিযোগ ‘অকাট্যভাবে প্রমাণিত না হওয়ায়’ এই শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির মতো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।

“তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, সেখানে তারা বলেনি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অভিযোগ অমূলক নয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এটা উঠে এসেছে।”

আর সিন্ডিকেটের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান, “আমার তো মনে হয়, গুরুতর শাস্তিই হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top