দেশের ইতিহাসে প্রথম রায় – থানায় পিটিয়ে হত্যা মামলায় তিন পুলিশের যাবজ্জীবন

PicsArt_09-09-09.25.00.jpg

থানায় পিটিয়ে হত্যা মামলায় তিন পুলিশের যাবজ্জীবন

আদালত প্রতিবেদকঃ থানায় গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন পুলিশের এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদসহ তিন পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এছাড়াও তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, এবং তা দিতে ব্যর্থ হলে অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দণ্ডিত করা হয়। বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের এটিই প্রথম রায়।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পল্লবী থানার এসআই জাহিদুর রহমান খান, এএসআই রাশেদুল ইসলাম ও এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টুকে অর্থদণ্ড ছাড়াও নিহতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের এই টাকা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবারকে দিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য হবে না।

পাশাপাশি মামলার অপর দুই আসামি সোর্স সুমন ও রাশেদকে সাত বছর করে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১১ নম্বর সেক্টরে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমন মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তার ভাই সুমনকে চলে যেতে বললে সুমন চলে যান। তবে পরদিন এসে সে আগের মতো আচরণ করলে জনি ও তার ভাই তাকে চলে যেতে বলেন। পরে সুমন পু্লিশকে ফোন করে তাদের ধরে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন ধাওয়া দিলে পুলিশ গুলি ছোড়ে।

পরে থানায় নিয়ে জনিকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে জনির অবস্থা খারাপ হলে ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান সহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন-পল্লবী থানার সাবেক এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এসআই আবদুল বাতেন, এসআই রাশেদ, এসআই শোভন কুমার সাহা, কনস্টেবল নজরুল, সোর্স সুমন ও রাসেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top