এক হয়ে কাজ করবে গীতিকবি সংঘ ও মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটি বাংলাদেশ
স্টাফ রিপোর্টঃ গীতিকবিদের স্বার্থ-সম্মান এবং সংগীতাঙ্গনের নানা জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে গীতিকবি সংঘ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল কপিরাইট রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক। যে বৈঠকের মাধ্যমে কপিরাইট খসড়া আইনে সংযুক্ত করার জন্য ১০টি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে সুরকারদের নিয়ে গঠিত হয়েছে নতুন সংগঠন- মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটি বাংলাদেশ (এমসিএসবি)। সভাপতি হিসেবে এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন নকীব খান।
২৮ আগস্ট দুটি সংগঠনের নেতারা বসেন যৌথ বৈঠকে। অনলাইনে আয়োজিত এই বৈঠকে গীতিকবি সংঘর উদ্যোগ ও প্রস্তাবনাগুলোকে সাধুবাদ জানান মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটি, বাংলাদেশ-এর নেতারা।
বৈঠকের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় সদ্য প্রয়াত তিন কিংবদন্তি আজাদ রহমান, আলাউদ্দীন আলী ও এন্ড্রু কিশোরকে স্মরণ করে।
উক্ত বৈঠকে দুটো সংগঠনই একহয়ে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের উন্নয়ন এবং সুরস্রষ্টা ও গীতিকবিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে।
গীতিকবি জুলফিকার রাসেলের সঞ্চালনায় এই বৈঠকে অংশ নেন সংঘের প্রধান সমন্বয়ক শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। আরও উপস্থিত ছিলেন সমন্বয় কমিটির সদস্য আসিফ ইকবাল, লিটন অধিকারী রিন্টু, হাসান মতিউর রহমান, কবির বকুল, গোলাম মোর্শেদ, সালাউদ্দিন সজল, প্রীতম আহমেদ, জাহিদ আকবর, সোমেশ্বর অলি ও জয় শাহরিয়ার।
অন্যদিকে মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটি, বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে অংশ নেন সভাপতি নকীব খান, মহাসচিব ফরিদ আহমেদ, সহ-সভাপতি ফোয়াদ নাসের বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী ইমন, প্রচার ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক বাপ্পা মজুমদার, কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য মানাম আহমেদ, আনিসুর রহমান তনু, রিপন খান, পার্থ মজুমদার ও এসআই টুটুল।
বৈঠকে দুটি সংগঠনের নেতাদের মধ্যে সংগীত ও সাংগঠনিক বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়।
এই বৈঠক প্রসঙ্গে গীতিকবি সংঘের প্রধান সমন্বয়ক শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বলেন, ‘আমরা সংঘ করেছি গীতিকবিদের নৈতিক আর আর্থিক অধিকার রক্ষার জন্য। এখন আমরা যে যুদ্ধটা শুরু করেছি, সেটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের যে খুব বেশি লাভ হবে তা নয়। কারণ আমরা বেশিরভাগই মধ্য বয়স অতিক্রম করে গেছি। আমাদের এই উদ্যোগ আসলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।’
শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বৈঠকে উপস্থিত সুরস্রষ্টাদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘সংগীতের বিকাশ ও সুস্থতার জন্য আমাদের একা এগিয়ে গেলে চলবে না। এগুতে হবে সবাইকে নিয়ে। ফলে যারা সুর করেন, বাজান- তাদের সঙ্গেও কথা বলা দরকার। কণ্ঠশিল্পীদের কোনও প্ল্যাটফর্ম থাকলে তাদের সঙ্গেও আমরা বসতে চাইতাম। আশা করছি সেটিও শিগগিরই হয়ে যাবে। কারণ, এক হওয়া এখন সময়ের দাবি। আমাদের আর বসে থাকার সুযোগ নেই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা না থাকলে এই অচলায়তন ভাঙা সম্ভব নয়। আমাদের ছোট ছোট ভুল বোঝাবুঝি হতে পরে। সেগুলো সামলে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।’
এদিকে মিউজিক কমপোজার্স সোসাইটি, বাংলাদেশ-এর সভাপতি নকীব খান বলেন, ‘গীতিকবি ও এমসিএসবি-এর মধ্যকার এই বৈঠকটি আসলেই ঐতিহাসিক। আমিও আগে কখনও গীতিকবি-সুরকারদের মধ্যে এমন মিলন দেখিনি। গীতিকবি সংঘ অলরেডি এগিয়ে গেছে তাদের নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। আমরাও শুরু করেছি। আমাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য একই। পার্থক্য নেই। সবাই দিন শেষে সংগীতের কল্যাণ চাই। যার জন্য দরকার ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আমরা চাই সবাই এক হয়ে এগিয়ে যেতে। আর বিভাজন নয়। আশা করছি কণ্ঠশিল্পীদেরও একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে দ্রুত। একসাথেই আমরা কাজ করবো- সেটাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য হোক। আমাদের এক নম্বর কাজ পারস্পরিক আস্থা আর শ্রদ্ধা অর্জন করা। এটা ঠিক থাকলেই আমরা একসঙ্গে নতুন কিছু করতে পারবো।’