ডানাহীন ১৫ আগস্ট – শাহানা সিরাজী
বৃত্তের বলয় প্রসারিত হতে হতে বেড়ে যায় পরিধি,ব্যাস ব্যাসার্ধ, কাছাকাছি আসে গোলার্ধ, আমরা কোথায়?
কুয়োর অনেক গভীরে জল নয় নীল আলো
পাথর নয়, তার চেয়েও তীব্র ধাতব
কুসুম নয় তারচেয়েও তীব্র পেলব
ধীরে ধীরে পুড়ে পুড়ে খাঁটি হয়ে ওঠে
দেশ ভাগ, দ্বিজাতিতত্ত্ব, মানুষের মননের খন্ডিতাংশ আমাদেরকে করেছে, জুলুমের শস্যতলা, অত্যাচারের আধার, শোষণের নির্বিকার, প্রতিবাদ, প্রতিকারহীন উর্বরভূমি..
শিক্ষা-স্বাস্থ্যই কেড়ে নেয়নি
নিয়েছে ভাত-রুটি বাঁচার মৌলিক অধিকার।
কে কথা বলছে? কে?
কে এই বালক?
কে এই যুবক?
কে এই সাহসী?
চারদিক থেকে রব আসে কে আবার!, টুঙ্গিপাড়ার খোকা…
আকাশ সেদিন বিস্ময়ে বুক পেতে দেয়
বাতাস সেদিন ঝিরিঝিরি কম্পন তোলে
মাটি অমিয় সুধায় উগরে দেয় যাবতীয় বেদনার নীল
জড়জগতের ফিসফাস ঘুম ভাঙায় পূর্ব বাংলার মানুষের…
সুঠামমাঝি বৈঠা ফেলেছে,চলো চলো…
দুর্দান্ত এক কবিতা – এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম-
এই কবিতা পেতে সেই খোকা কাটিয়েছে জীবনের উত্তাল সময় অন্ধকার প্রকোষ্ঠে,ইয়াহিয়ার প্রশাসন
তাঁকে খেতাব দিলো,বিদ্রোহী, ফাঁসির রায় দিয়েও হজম করতে পারেনি যাকে… সেই তো শেখের বেটা শেখ..
কিন্তু হজম করলো,স্বাধীনবাংলার বিপদগামী সেনা
এভাবেই মোড় ঘুরে যায় ইতিহাসের। মানুষ আবার বিচলিত হয়,আবার পথ হারা হয় আজো পায়নি দিশা
যে রক্তে ঢেকেছে মানুষের মুখ
সে রক্ত মুছে কী ভাবে দেখবে কদর্য মুখ
মুখের আড়ালে মুখ
চাতুরীর আড়ালে চাতুরি!
টুঙ্গিপাড়ায় নেমে এসেছে চিরনিস্তব্ধতা
জাতির গায়ে লেগে গেলো বিশ্বাসঘাতকতার সিল!
গোলাপজলে স্নান দেবে বলে যতোই ধব্জাধরুক
অমোছক অস্ট্রিচে লেখা সিল মুছবে না
এ আগস্ট বেদনার উষ্ণীষ পরে ধারে ধারে ঘুরে
আমায় এনে দাও মুজিবকে আর একবার শুনি
এ দেশে দূর্নীতি বাজের ঠাঁই নেই
এ দেশে ঘুষখোরের জায়গা নেই
এ দেশে ঋণখেলাপীর স্থান নেই
এবারের সংগ্রাম চোরবিহীন দেশ গড়ার সংগ্রাম
রাজদণ্ড যখন হাতে নিয়েছি এ দেশ চোরমুক্ত করবো ইনশাল্লাহ…
শাহানা সিরাজী
ইন্সট্রাক্টর, পিটিআই
মুন্সীগঞ্জ
কবি,প্রাবন্ধিক ও কথা সাহিত্যিক।