ভোর – আশরাফুল আলম
হালকা অন্ধকার মাখামাখা ভোর
প্রাতঃভ্রমণে যাই
ফিরে আসি মৃদু আলোর ভোরে ।
ভোর ।
ফেরার পথে অচেনা একজন
ইশারায় কাছে ডাকতেই ইচ্ছে হোল , যাই ।
“ভোর দেখেছেন ?” ঠোঁটে জমাট বাঁধা প্রশ্ন।
আমার অদম্য চোখ লোকটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল
ঘুঘুর বুকের মত নরম চোখ
হাতের শিরায় জ্বলছে রক্তের চাপ
চুলের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে এলোমেলো অন্ধকার,
ভোরের আলো এসে পড়া অক্ষম হাতে
ঝুলে আছে ভোর, এ রকম মনে হোল তাঁকে ।
এক ঝাঁক রূপালী পাখি ভোরের আলো হয়ে উড়ে গেল
“আমি ভোরের আকাঙ্খায়
অচেনা ফুলের মত ফুটে থাকি , হাঁটি
হাজার হাজার বছর নদী ধরে, লোকালয় ধরে ধরে ।
ভোর দেখেছেন ?”
“কি বলছেন ? আমার সতাশ বছরের প্রাতঃভ্রমণ,
ভোর দেখি প্রতিদিন দেখি ।”
আমি ভাবি লোকটা কি খুনী
অদ্ভুত কৌশলে রক্তের গন্ধ লুকিয়ে রেখেছে,
নাকি উন্মাদ অসংলগ্ন গৃহহারা কোন পথিক
নাকি ফুরিয়ে যাওয়া মানুষ
এ সব ভাবতে ভাবতেই দেখি
তার ঠোঁটের হাসি আর নরম চোখ
দাউ দাউ করে জ্বলছে, উড়িয়ে দিচ্ছে
রাষ্ট্র, রাষ্ট্র নায়ক, রাজনীতি, গণতন্ত্র, অর্থনীতি,
বোমা কেন্দ্র, নৃকুলবিদ্যা, বৈশ্বিক অনাচার ।
অসহায় আত্মক্রন্দনে মগ্ন ভগ্ন এক অচেনা মানুষ
স্তম্ভিত এক চিৎকারে ভাসতে থাকে
“হে সূর্য , আমাদের অভিবাদন গ্রহণ কর,
আমাদের অসীম কৃতজ্ঞতা
তোমার আলোতে লুটিয়ে পড়ুক ।
তুমি তো আছই
তারপরও বলি
হে মানুষ ,
আমরা মানুষের জন্য মানুষের তৈরী আলো চাই
হে মানুষ ,
আমরা মানুষের তৈরী নির্ভুল ভোর চাই ।”
আশরাফুল আলম
বাচিক শিল্পী
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও
বাংলাদেশ বেতারের সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা