খালেদা জিয়ার জামিন ইস্যুতে অনমনীয় সরকার
বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্ত ইস্যুতে অনমনীয় সরকার। আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে তিনি কোনও ধরনের ছাড় পাবেন না। বুধবার আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে গেলে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, দলের (আওয়ামী লীগের) সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা এ বিষয়ে বেশি কথাবার্তা না বলার নির্দেশনা দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘কোনও উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলবা না। তার (খালেদা জিয়া) বিষয়ে কোনও কম্প্রোমাইজ নয়।’
প্রসঙ্গত: হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে বিএনপির সংসদ সদস্যরা মঙ্গলবার দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জানান জামিন পেলে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন। এর পরদিন বুধবার হারুনুর রশীদ সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও চেয়ারপারসনের জামিনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পরে ওবায়দুল কাদের বিষয়টি নিয়ে রাতে (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে বৈঠক শেষে হারুন সাংবাদিকদের জানান।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চলমান অভিযান নিয়েও কথা বলেন। এ সময় তিনি অভিযুক্তদের বিভিন্ন সময়-আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য দলের কিছু নেতাদের ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, ‘ বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজদের জন্য কেউ কোন তদ্বির নিয়ে আসবেন? কাউকে বাঁচাতে চাইবেন? আমি কিছু করতে পারবো না।’ দলীয় নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, কে কী করেছেন আমি সব জানি। অপরাধীদের কেউ শেল্টার দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এ সময় তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘ক্যাসিনো খেলেন? ক্যাসিনো ব্যবসা করেন? আমি ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের জন্য ভাসান চরে থাকার ব্যবস্থা করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য এই অভিযান চালাতে হবে।
প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বৈঠক শেষে গণভবনের গেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথা বলেন। চলমান অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনও ব্যক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কারও নাম উল্লেখ করে আলোচনা হয় নাই তবে, চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।’
বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত অনির্ধারিত বৈঠকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
বৈঠকে আফজাল হোসেন তার সম্পাদিত ‘অভিবাদন জননেত্রী শেখ হাসিনা’ বইটি শেখ হাসিনা বরাবর হস্তান্তর করেন। শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে এই বইটি প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটি।