‘ডাচ ডিজিজ’ নিয়ে সর্তক করলেন সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ একটি দেশের ৮০ শতাংশের বেশি আয় একটি খাত থেকে হওয়ার পাশাপাশি যদি ব্যাংকিং খাতে অব্যবস্থাপনা তৈরি হয় তাহলে সেই দেশ ডাচ ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। যেমনটা হয়েছে ভেনিজুয়েলায়।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে সিআইপি কার্ডপ্রদান অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে পরামর্শ দেন।
দেশটির উদাহরণ টেনে তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদেরও একটি খাত থেকে ৮৪ শতাংশ আয় হয়। সুতরাং বিষয়টি চিন্তা করতে হবে এখনই।
অনলাইনের তথ্যভাণ্ডার উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ আসবে কোনো একটা নির্দিষ্ট সেক্টর থেকে। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়তে থাকবে খুবই দ্রুত। মানুষ তার জীবনযাত্রার মান বাড়াবে। শ্রমিক তার বেতন বাড়াবে আরও সুখে থাকার আশায়। তাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে তাল মেলাতে আমদানি নির্ভর অর্থনীতি গড়ে উঠতে থাকবে। সমাজের ক্ষুদ্র একটা অংশ বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে আর সিংহভাগ মানুষের সম্পদ, উপার্জন কমতে থাকবে। তখনই দেশটি ডাচ ডিজিজে আক্রান্ত হয়’।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, একটি দেশকে আপনারা লক্ষ্য করুন। সেই দেশটির নাম হলো ভেনিজুয়েলা। ২০১২ সালে দেশটির জিডিপি ছিল ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। যাদের দারিদ্রের সংখ্যা ছিল ২০ শতাংশ। সাত বছর পরে ২০১৯ সালে সেই দেশের করুন অবস্থা। কারণ ভেনিজুয়েলার একটি সেক্টর থেকে তাদের আয় হতো। সেটা হলো তেল। সৌদি আরবের পরে দ্বিতীয় তেল উৎপাদনকারী দেশ ছিল ভেনিজুয়েলা। যখন তেলের দাম কমে যায়, তখন অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে ভেনিজুয়েলা। এ মুহুর্তে ভেনিজুয়েলার মূল্যস্ফীতি ৮০ হাজার শতাংশের বেশি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এক লাখ শতাংশে উন্নীত হবে দেশটির মূল্যস্ফীতি। তাদের মূল্যস্ফীতির কারণ দেশটির একটি খাত থেকে আয় হতো ৮৪ শতাংশ। সেটি হলো তেল। সেই তেলের দাম কমার পরে দুর্ভিক্ষের পথে যাচ্ছে ভেনিজুয়েলা।
তিনি বলেন, আমাদেরও কিন্তু একটি খাত থেকে আসে ৮৪ শতাংশ। এটাকে বলে ডাচ ডিজিজ। ডাচ ডিজিজ কেন হয়। কোনো দেশে যদি একটি খাত থেকে ৮০ শতাংশের বেশি আয় হয়। আর যদি ব্যাংকিং খাত অব্যবস্থাপনায় পড়ে তাহলে সেই দেশ ডাচ ডিজিজে পড়ে। সুতরাং আমাদের চিন্তা করতে হবে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় মার্কেট উইল ডাইভারসিফাই। আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী অনেক দেশে রপ্তানিতে সফল হয়েছেন। সুতরাং একটি খাতের উপর নির্ভরশীল না হয়ে আমাদের পণ্যের বহুমুখীকরণ, বাজার বহুমুখীকরণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এটি আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ।