৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ করা গৃহবধূ জামিন পেল।
পাঁচ পুলিশ সদস্য থানায় গণধর্ষণ শিকার সেই গৃহবধূ জামিন পেলেন
খুলনা রেলওয়ে (জিআরপি) থানার অভ্যন্তরে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে ফেনসিডিল মামলায় জামিন দিয়েছেন আদালত। বুধবার খুলনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফুলতলা আমলি আদালতের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান ওই গৃবধূকে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলামের জিম্মায় জামিন প্রদান করেন।
মানবাধিকার সংস্থার পক্ষে অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর জামিনের জন্য বুধবার আদালতে আবেদন করে তাদের জিম্মায় প্রদানের আবেদন জানান। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গৃহবধূর জামিন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, যশোর থেকে কমিউটার ট্রেনে খুলনায় আসার পথে গত ২ আগস্ট ফুলতলা রেলস্টেশনে জিআরপি পুলিশ সদস্যরা ওই গৃহবধূকে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে আটক করে। রাতে তাকে খুলনা জিআরপি থানা হাজতে রাখা হয়। ৩ আগস্ট তার কাছ থেকে ৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়। খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-ফুলতলার মাধ্যমে ওই দিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ৪ আগস্ট ওই গৃহবধূকে আদালতে জামিন শুনানির জন্য হাজির করা হলে তিনি জিআরপি থানায় রাতভর গণধর্ষণের ঘটনাটি আদালতের সামনে তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উছমান গনি পাঠান, এসআই নাজমুল ইসলাম ও এসআই গৌতম পালসহ (মাদক মামলায় নিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা) ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ করেন। আদালতের নির্দেশে ৫ আগস্ট খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। তবে আদালত ব্যতিত ডাক্তারি পরীক্ষার ফলাফল মিডিয়াকে জানানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মেডিকেলের আরএমও ডা. অঞ্জন কুমার চক্রবর্তী। এরপর পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নির্দেশে ধর্ষণের অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠিত হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন, কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ। এছাড়া সদস্যরা হলেন, কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের ডিআইও-১ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) শম কামাল হোসেইন ও দর্শনা রেলওয়ে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. বাহারুল ইসলাম। এ কমিটি ৬ আগস্ট থেকে তদন্ত শুরু করে। ৭ আগস্ট ওসি উছমান গনি পাঠান ও এসআই নাজমুলকে ক্লোজড করে পাকশী নেয়া হয়। ৮ আগস্ট পাকশী ও ঢাকা থেকে গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত টিমের সদস্যরা আদালতের অনুমতি নিয়ে জেল গেটে ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর আদালতের নির্দেশে গত ৯ আগস্ট ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে জিআরপি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে ফিরোজ আহমেদকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তিনি তদন্তের শুরুতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৪ আগস্ট আবেদন করেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে ২৬ আগস্ট তিনি জেল গেটে ভিকটিমকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করেন।