আজ এম ভি জাহিদ-৭ কে ৭০ হাজার, এমবি গাজী সালাউদ্দিন কে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সাগর চৌধুরীঃ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পৌরসভার লঞ্চঘাটে, এমভি জাহিদ-৭ লঞ্চের মালিকের পক্ষে সুপারভাইজারকে ৭০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা এবং এমবি গাজী সালাউদ্দিন লঞ্চের মালিকের পক্ষে সুপারভাইজারকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজকের অভিযান পরিচালনা করেন, বোরহান উদ্দিন উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা, খালেদা খাতুন রেখা এবং বোরহানউদ্দিন উপজেলার এসি ল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, শেখ রফিকুল হক।
বোরহানউদ্দিনে লঞ্চ যাত্রীদের কাছ থেকে বেশী ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, নিয়ম বহিভুত ভাবে লঞ্চের ছাদে যাত্রী পরিবহন, ভাড়ার তালিকা হালনাগাদ না করা, সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি করা সহ এমভি জাহিদ-৭ লঞ্চের স্টাফ ও কর্মচারীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ, লঞ্চের স্টাফদের পরিচয় পত্র না থাকা, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ উত্তীর্ণ, লঞ্চ অপরিষ্কার ও অপরিছন্ন এসব বিষয়ে লঞ্চ যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আজ এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বোরহানউদ্দিন পৌরসভার লঞ্চঘাটে যাত্রী কামাল অভিযোগ করে বলেন, এম ভি জাহিদ লঞ্চের স্টাফরা সব সময় নানা রকম হয়রানি মূলক আচার আচরণ করে, বিধি মোতাবেক ভাড়ার চেয়েও বেশি ভাড়া নেয়, এদের কাছে কোন রকম নিয়ম নীতি নেই।
আরেক যাত্রী শাহিন অভিযোগ করে বলেন, যাত্রীরা লঞ্চের স্টাফদের কাছে জিম্মি। কেবিন চাইলে এরা নানা রকম টালবাহানা করে, কেবিন থাকার পরেও কেবিল নাই বলে কিন্তু বেশি ভাড়ার অফার করলে এরা নগদ টাকা নিয়ে কেবিন দেয়।
এ সময় এম ভি জাহিদ-৭ লঞ্চের আরেক যাত্রী কবির বলেন, শুধু কি এরা ভাড়া বেশি নেয়, সেই সাথে খাবারের মানও খারাপ। এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তারা ক্ষমতার দাপট দেখায় এবং বলে রাজনীতিক নেতাদের পাওয়ার নিয়েই লঞ্চ চলাচল করে।
আজকের অভিযানে বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসি ল্যান্ড, শেখ রফিকুল হক বলেন, আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এমভি জাহিদ-৭ লঞ্চের মালিকের পক্ষে সুপারভাইজারকে ৭০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা এবং এমবি গাজী সালাউদ্দিন লঞ্চের মালিকের পক্ষে সুপারভাইজারকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বোরহানউদ্দিন পৌর লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ফখরুল মেম্বারের কাছে লঞ্চে জরিমানা করার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের নিয়ম নীতি অমান্য করার কারণে আজ দুটি লঞ্চকে জরিমানা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, এখানে আমাদের করার কিছুই নেই, ভুল ত্রুটি ছিল বলেই তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে, তবে ঘাট ইজারাদারের পক্ষ থেকে তাদেরকে বলব তারা ভুলত্রুটি শুধরে নিয়ে বোরহানউদ্দিন টু ঢাকা যাতায়াত করবেন।
বোরহানউদ্দিন পৌর লঞ্চ ঘাটের সুপারভাইজার হেলাল বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে যাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে সব লঞ্চ স্টাফদেরকে সতর্ক করেছিলাম কিন্তু কোন লঞ্চের স্টাফরাই আমাদের কথা শোনেনি, মালিকপক্ষের কাছেও আমরা এর আগে বলেছিলাম। আজ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ঘাটের সুপারভাইজার হিসাবে তাদের কাছে অনুরোধ তারা যেন ভুলগুলো শুধরে চলাচল করে।
দুটি লঞ্চকে জরিমানা করা হয়েছে? এমন প্রশ্নে জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার এসি ল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অদ্যাদেশ ১৯৭৬ এর ৫৪ ধারা সহ ভিবিন্ন উপধারা মোতাবেক আজকে এই জরিমানা করা হয়েছে।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা, খালেদা খাতুন রেখা বলেন, অনিয়মের অভিযোগ পেলেই লঞ্চ গুলোর বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব, প্রয়োজনে আবারো জেল ও জরিমানা এর মত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উল্লেখ্য, বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা, খালেদা খাতুন রেখা এর আগেও ভিবিন্ন অনিয়মের অভিযোগে লঞ্চগুলোর স্টাফদের সর্তক্য করেছিলেন এবং সব রকমের অনিয়ম বন্ধ করতে বলেছিলেন।