বোরহানউদ্দিনে এমভি জামাল ৯ লঞ্চকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা।
সাগর চৌধুরীঃ আজ সোমবার বিকেলে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পৌরসভার লঞ্চঘাটে, এমভি জামাল ৯ লঞ্চের সুপারভাইজার সৈয়দ আনোয়ার হোসেন কে বিশ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা; আনাদায়ে দুই মাস কারাদন্ড দেন বোরহানউদ্দিন উপজেলার এসি ল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, শেখ রফিকুল হক।
বোরহানউদ্দিনে লঞ্চ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, নিয়ম বহিভুত ভাবে লঞ্চের ছাদে যাত্রী পরিবহন এবং ভাড়ার তালিকা হালনাগাদ না করা, সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি করা, এসব বিষয়ে লঞ্চ যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আজ এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে বোরহানউদ্দিন পৌরসভার লঞ্চঘাটে এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের কেবিন যাত্রী, স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ঈদ ছাড়া সিঙ্গেল কেবিন ভাড়া একহাজার টাকা কিন্তু বারোশো থেকে পনেরশো টাকা কেবিন ভাড়া চাচ্ছে কেবিনের দায়িত্বে থাকা এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের কেবিন স্টাফ রাব্বি।
আরেক যাত্রী শামসুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, স্বাভাবিক ভাবে আমরা দুইশ বা আড়াইশো টাকা দিয়ে যাওয়া আসা করি ঢাকায় কিন্তু বিগত বেশ কয়েকদিন আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের স্টাফরা।
এ সময় এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের আরেক যাত্রী হুমায়ুন বলেন, এদের আচার ব্যবহার খুবই খারাপ। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে এরা ভাড়া বেশি নেয়। কেবিনের ভাড়া এবং খাবারের জন্য ভিন্ন চার্জ নেয়ার পরও এরা অতিরিক্ত টাকা দাবি করে।
এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের কেবিন স্টাফ রাব্বিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বোরহানউদ্দিন উপজেলা এসি ল্যান্ড, শেখ রফিকুল হক অতিরিক্ত কেবিন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্ন করলে, সে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু উপস্থিত কেবিন যাত্রীদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের স্টাফ রাব্বি কে আইনে আওতায় নিয়ে আসার আদেশ দেন, শেখ রফিকুল হক।
এ সময় বোরহানউদ্দিন থানার এস আই জ্ঞান কুমার ও তার সঙ্গীয় ফোর্স এমপি জামাল ৯ লঞ্চের কেবিন স্টাফ রাব্বি কে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসি ল্যান্ড, শেখ রফিকুল হক এম ভি জামাল ৯ লঞ্চে অভিযান পরিচালনা করার সময় এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের সুপারভাইজার সৈয়দ আনোয়ার হোসেন লঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসি ল্যান্ড শেখ রফিকুল হক, এম ভি জামাল ৯ লঞ্চের সুপারভাইজার সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের কাছে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, সুপারভাইজার সৈয়দ আনোয়ার হোসেন সঠিক উত্তর দিতে ব্যার্থ হয় এবং সরকার নির্ধারিত লঞ্চ ভাড়ার তালিকা দেখাতেও ব্যার্থ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২০১৩ সালের ভাড়ার তালিকা দেখায়। কিন্তু সে সময় শেখ রফিকুল হক বলেন, ভাড়ার তালিকা তো লঞ্চের সামনে রাখার কথা কিন্তু আপনি রাখেননি, তাছাড়া ২০১৩ সালের লঞ্চ ভাড়া তালিকা তো চলবে না, ভাড়ার তালিকা হালনাগাদ চার্ট আপনাকে দেখাতে হবে।
এ সময় বোরহানউদ্দিন থানার এস আই জ্ঞান কুমার ও তার সঙ্গীয় ফোর্সকে এমভি জামাল ৯ লঞ্চের সুপারভাইজার সৈয়দ আনোয়ার হোসেন কে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আদেশ দেন।
বোরহানউদ্দিন পৌর লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার ফখরুল মেম্বারের কাছে লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাড়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ লঞ্চ কর্তৃপক্ষের। ভাড়া কম বা বেশি নিলে এর দায়ভার লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নেবে। এখানে ঘাট ইজারাদারের কোন ভূমিকাই নেই।
এম ভি জামাল লঞ্চকে বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে? এমন প্রশ্নে জানতে চাইলে
বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এসি ল্যান্ড শেখ রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর ৫৪ ধারা মোতাবেক আজকে এই জরিমানা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, খালেদা খাতুন রেখা এর আগে এমভি জামাল ৯ লঞ্চকে ভিবিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সর্তক্য করেন এবং সব রকমের অনিয়ম বন্ধ করতে বলেন।