ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে যাত্রীদের দুর্ভোগ; দেখার কেউ নেই।
সাগর চৌধুরীঃ ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে উপশহর বাংলাবাজারে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিস। ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিক পাশেই ভোলা চরফ্যাশন রাস্তা বন্ধ করে প্রতিনিয়ত চলছে পল্লী বিদ্যুতের খাম্বা উত্তোলনের কাজ। রাস্তার দুই পাশে শত শত গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রকাশ্য দিনের বেলা এসব খাম্বা উত্তোলন করছে কতিপয় ঠিকাদার।
সাধারণ জনগণ ও পথচারীরা নানা রকম দুর্ভোগে পড়ছে। ভোলা থেকে আসা বাস গুলো নির্দিষ্ট সময় পার করার পর ও রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছে না যার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে বাস যাত্রীরা, রোগী ভর্তি এম্বুলেন্স এবং দূর-দূরান্তের যাত্রীরা।
সাধারণ মানুষ ও যাত্রীদের এমন দূর্ভোগে নষ্ট হচ্ছে মানুষের কর্ম ঘন্টা। স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জানানোর পরও কোন সুরাহা মিলছে না।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এগুলো ঠিকাদারের কাজ সকল দায়-দায়িত্ব ঠিকাদারের।
স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বলছে, সময় মতো কাজ করতে হয় বলেই রাস্তা বন্ধ করে কাজ করছে পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদারেরা।
ভোলা থেকে ছেড়ে আসা চরফ্যাশন গামি বাসের ড্রাইভার আমিনুল মিয়া জানান, বিভিন্ন স্তরের কর্তা ব্যক্তিদের জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এতে হয়রানি হচ্ছে বাসের যাত্রী, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মালিক-শ্রমিক।
লালমোহন উপজেলা থেকে ছেড়ে আসা রোগী ভর্তি এম্বুলেন্স এর ড্রাইভার ফখরুল জানান প্রতিনিয়ত রাস্তা বন্ধ করে খাম্বা উত্তোলনের কারণে অনেক সময় মুমূর্ষ অবস্থায় রোগীকে হাসপাতলে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে অনেক রোগীর মৃত্যু হয় কিন্তু রাস্তা বন্ধ না করে আমাদের যদি সঠিক সময়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হতো তবে এসব রোগী মারা যেত না।
উপশহর বাংলাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, প্রতিনিয়ত এমন অভিযোগ আমি শুনতে পাই কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে আমি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না।
ভোলা জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি দৌলতখান উপজেলায় হওয়ায় দৌলতখান থানার ইনচার্জ এনায়েত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, প্রতিনিয়তই এমন অভিযোগ আসছে তারপরও (সাংবাদিক) আপনারা যখন এই বিষয়ে জানতে চেয়েছেন বিষয়টি আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
এদিকে দৌলতখান উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র মোহন নাথ কে জানানো হলে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে অভিযোগগুলো শুনেছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের কিছু সময় দিতে হবে।
কিন্তু সেই সময় কবে নাগাদ শেষ হবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা বুঝতে চেষ্টা করেন যে এগুলো কারো ব্যক্তিগত কাজ নয় জনগনের সেবায় বিদ্যুৎ অফিস ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই কাজগুলো করছে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস আপনাদের দিচ্ছি।
ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি দৌলতখান উপজেলায় হওয়ায় দৌলতখান উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই এই কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে, জনগণের একটু দুর্ভোগ হচ্ছে বুজতে পারছি, আশা করি উন্নয়নের স্বার্থে সবাই মেনে নিবেন।
এদিকে ভোলা জেলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি না জানি না জানি এমন একটি ভান করেন।
তারপরও এ ডি সি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদারেরা রাস্তার উপর গাড়ি থামিয়ে খাম্বা উত্তোলন করছে, বিষয়টি আসলে জনদুর্ভোগের আওতাধীন। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি আপনার অভিযোগ সত্যি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে ঘটনাস্থলে পেরণ করব।
ভোলা জেলার সড়ক ও জনপথ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আল করলে তারা বলেন, আমরা রাস্তায় এসব ঘটনা দেখি কিন্তু আমাদের করার কিছুই নেই।
তবে প্রতিনিয়ত যারা ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে যাতায়াত করেন তারা অনেকেই অভিযোগ করেন, যে জনগণের জন্য উন্নয়ন সেই জনগণের রাস্তায় বাধা সৃষ্টি করে উন্নয়ন সেটা আবার কেমন উন্নয়ন?
উন্নয়নের কথা যারা বলছেন, সাধারণ জনগণের চলাচলের পথ রোধ করে যে উন্নয়ন করছেন, সেই উন্নয়ন কতটুকু জনগণের উন্নয়ন বলে বিবেচিত হয় এমনই প্রশ্ন করছেন ভোলার সাধারণ জনগণ।