স্বার্থপর
শাহিনা খাতুন
ঐ যে প্রতিদিন দেখা হওয়া কৃষ্ণচূড়া গাছটা
কখনও স্বার্থপর হয়নি
ধন্যবাদ বলতে ভুলে গেছি বহুদিন
তবুও বলেনি হে নির্বোধ ব্যস্ত পথিক
তোমায় তিরস্কার
কিন্তু এই যে ভাই মানুষ তুমি
তোমার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা
লড়াই করে কতদিন গান শুনিনি
হারিয়ে যাওয়া দোতারাটা
খুঁজে পেয়েও ছুয়ে দেইনি
বুকসেলফের মাঝখানে সোজা করে
বাঁকা করে টর্চের আলোয় বহুবার খোঁজা
আমার মেন্ডেলিন
ভাল আছতো?
তোমার কথা মনে করে
ঠিক করেছি আজ খানিক কাঁদবো
এখনও সেই জনপদের ভালবাসার চিহ্নগুলো
গুছিয়ে উঠতে পারিনি
গাদাগাদি ঠাসাঠাসির শহর
ভাড়া করা ফ্ল্যাটে মধ্যবিত্ত জীবন
যত্রতত্র ছড়ানো ছিটানো জিনিসপত্র
তবু্ও মফস্বলে বানানো অতি সাধারণ ক্রেস্ট
ফেলে দিতে পারিনি
যতবারই ফেলবো ভেবেছি
অনেকগুলো মায়াময় মুখচ্ছবি
সামনে এসে দাড়িয়েছে
ছড়ানো ছিটানো ভালবাসা
আমিও ভুলে যাইনি
বারবার শহরটাকেও পরখ করতে চেয়েছি
ভেবোনা যা যা স্বার্থপরতা করলে
তা তোমায় আনন্দিত করবে
অথবা আমায় লজ্জিত হতে দেখে
ভিষণ পরিতৃপ্ত হয়ে যাবে
যে আজন্মকাল পথিক
তাকে লম্বা পথের ঠিকানা দিইয়ে লাভ নেই
যে প্রতিক্ষণ মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে
তাকে হত্যা করতে চেয়ে লাভ নেই
তার চেয়ে ঐ কৃষ্ণচূড়ার রাঙা পথের ধারে
চুপ করে বসে একদিন
বাতাসের শব্দ শুনে দেখ
মনের ভিতর জমে থাকা মেঘ
তুলো হয়ে উড়ে যাবে দূরে বহুদূরে।