বাংলা ব্যান্ড সংগীতের এক বিস্ময় পুরুষ আইয়ুব বাচ্চু – সাগর চৌধুরী।

PicsArt_10-18-01.03.03.png

বাংলা ব্যান্ড সংগীতের এক বিস্ময় পুরুষ আইয়ুব বাচ্চু – সাগর চৌধুরী।

আমি রেডিও এবং টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত হওয়ার পর বে-সরকারী টিভি বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগে সহকারী প্রযোজক হিসেবে কাজ করছি, এসময় সিনিয়র প্রযোজক জাবেদ ইকবাল তপু ভাই আমাকে ডেকে বলল, তোর আউডডোর সুটিং থাকলে বাতিল কর। বাচ্ছু ভাই অফিসে আসছে, মিটিং আছে।

খ্যাতিমান সুরকার ও সংগীত পরিচালক এবং সংগীত শিল্পী বাচ্চু ভাইয়ের ইন্টার ভিউ করার জন্য সেট, লাইট এবং ক্যামেরা রেডি করলাম মাত্র ১ঘন্টার সময়ে।

স্টুডিও থেকে বের হয়ে দেখলাম অনুষ্ঠান প্রধান, শামিম ভাই, অনুষ্ঠান ম্যানেজার রাকিব ভাই, সিনিয়র প্রযোজক বিপ্লব ভাই সহ অনুষ্ঠান বিভাগের প্রায় সবাই অপেক্ষা করছে বাচ্চু ভাইয়ের জন্য।

একজন বাচ্চুর জন্য, তখন কার সময়ে আমাদের সিইও স্যার ও গেট থেকে বাচ্চু ভাইকে এগিয়ে নিতে এলেন। বহু মন্ত্রীদের লিষ্ট দেখেছি যারা বাংলাভিশনে এসে অনুষ্ঠান শেষ করে চলে যেতেন তাদের জন্য অফিসের একজন পিয়নও অপেক্ষা করেনি।

সেদিন পুরো অফিস কেমন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত। নিউজ প্রডাকশনও বাচ্চু ভাইকে এক নজর দেখার জন্য অনুষ্ঠান বিভাগে এসে উকিঝুকি মারছে।

খুব সাবধানে তার ইন্টারভিউ শেষ করলাম। তবে সেই দিন থেকে শুরু, আমি, সাজ্জাত, লুৎফর হাসান এরাই মুলত বাংলাভিশনের সহকারী প্রযোজক হিসাবে কাজ করতাম ও লিরিক লিখতাম।

সেই পরিচয়ের পর থেকে তারপর আমার লেখা কত গানের সুর করেছেন বাচ্চু ভাই তার সঠিক হিসেব নাই। এটিএন বাংলার চেয়ারম্যনের স্ত্রী ও শিল্পী ইভা রহমানের গান সুর করার সময় রাতের পর রাত জেগেছি।

হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, এস আই টুটুল, পার্থ মজুমদার, বাপ্পা মজুমদার, সহ আরও কত সিনিয়র শিল্পীও সুরকারের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে।

বাচ্চু ভাইয়ের শো লাইভ করার সুবাধে কত জেলায়, জেলায় ঘুড়েছি। কত রাত তার মগবাজারের স্টুডিওতে কাটিয়েছি, কাজী অফিস গলির একতলা বাসার গেটে লিরিক লেখা কাগজ হাতে কত অপেক্ষা করেছি।

প্রিয় শিল্পী ও প্রানের দুই বড় ভাই আসিফ আকবর এবং এস আই টুটুল কত কটু কথা বলতো আমাকে বাচ্চু ভাইয়ের কাছে যেতাম বলে।

তবে আজ মনে হয় বাচ্চু ভাইয়ের দেহত্যাগে অামার চেয়েও বেশী কষ্ট আর দুঃখ পাবে তারা দু’জন, আসিফ আকবর এবং এসআই টুটুল ভাই। কারণ তারা আমার চেয়েও বাচ্চু ভাইকে বেশী ভালোবাসত।

বাচ্চু ভাই, আমি যখন এই লেখা লিখছি তখন আপনার আর এই লেখা পড়ার মত সুযোগ নাই।
আপনার দেহ ঢাকায়, আর আমি ঢাকা থেকে হাজার মাইল দূড়ে। আপনার সাথে শেষ দেখাটা আর হলো না, আমাকে ক্ষমা করবেন।
তবে আপনার এই চলে যাবার মিছিলে একদিন আমি ও আসব কারণ আমাদের শেষ গন্তব্য সেখানে।

যেখানেই থাকুন ভালোথাকুন।
সাগর চৌধুরী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top