মৌলভীবাজারে বৈধ ব্যবসার পাশাপাশি অবৈধ ব্যবসা করছে সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জ

Picsart_23-12-30_11-22-02-247.jpg

সৈয়দ ফয়ছল আহমদ মানি লন্ডারিং করে বিদেশে টাকা পাচারকারি ও অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার সাথে জরিত বলে সূত্র বলছে। সূত্র আরও বলছে, দেশের টাকা পাচার করে আমেরিকায় কিনেছে বাড়ি।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ গত ১৪ নভেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার কয়েক টি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনকে খোলা বাজারের ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. শেখ হেলাল শিকদার।

ডলারের দাম যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে দাম নির্ধারণের জন্য মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর সংগঠন মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে এখন থেকে মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার কিনে সর্বোচ্চ ১১৭ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। এর চেয়ে বেশি দামে ডলার লেনদেন করলে মানি চেঞ্জারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ব্যাংক।

মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর দেয়া আইন অনুযায়ী কোনটাই মানছেন না সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জ। ফলে ভুগান্তিতে পরছে বিদেশ গামী যাত্রীরা। পাসপোর্টে এন্ডোর্স নিয়ে বিদেশ যাত্রীদের  একটি বড় সমস্যা, সিলেট যেখানে পাসপোর্টে এন্ডোর্স করতে লাগে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা সেখানে সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জে লাগে ৬৫০ থেকে ৭৫০টাকা।

সিলেটে মানি এক্সচেঞ্জে এর সাথে কথা বলে জানা যায়, ডলার পাউন্ড বেচা কেনা করতে হলে পাসপোর্ট দিয়ে করতে হয়। কিন্তু সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জে পাসপোর্ট ছাড়াই ডলার পাউন্ড প্রকাশ্যে ক্রয় বিক্রয় করে যা অনিয়ম বা অবৈধ।

এসব অনিয়ম নিয়ে রয়েল ম্যানশনের ব্যবসায়ী বা আশ পাশে ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক সৈয়দ ফয়সল আহমদ নিরীহ ব্যবসায়ীদের পুলিশ বা সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি দামকি দেয় বলে জানান এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। কয়েক দিন আগে ডিবি পুলিশ দিয়ে কয়েক জন ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দেন ফয়সল আহমদ পরে আরো কয়েক জন ব্যবসায়ীদের উপর মামলা হয়।

জামিনে বেরিয়ে আসার পর জেলা প্রশাসক হল রুমে জেলা প্রশাসক ড.উর্মি বিনতে সালাম তাদের কে নিয়ে বসলে ব্যবসায়ীরা সবাই একে একে তাদের বক্তব্য দেন। বক্তব্য শুনে জেলা প্রশাসক সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক সৈয়দ ফয়সল আহমদকে হুশিয়ার করে বলেন, বৈধ ব্যবসার পাশাপাশি অবৈধ কি কি ব্যবসা হয় তা আমরা তদন্ত করে দেখব।

সাধারন মানুষ বলছে সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স একটি কিন্তু তার ব্যবসা প্রতিষ্টান ৩ টি বাকি ২ টি দোকানের লাইসেন্স নেই, তাহলে সেই দোকান ২ টি কিভাবে বৈধ হলো।

জানাজায়, মৌলভীবাজার সোনালী ব্যাংকের বৈদেশিক বানিজ্য শাখায় প্রতি রাত ৮/৯ টায় সৈয়দ ফয়সল আহমদ ৬ থেকে ৭ শ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জমা দেন।  বাংলাদেশের সব ব্যাংক বন্ধ হয় ৪ টায় আর সৈয়দ ফয়সল আহমদের জন্য ব্যাংক খোলা রাখা হয় রাত ৯ টা পর্যন্ত।

এবং সেই ৬ শত থেকে ৭ শত ডলার পাউন্ড পাসপোর্ট বা ক্রয় বিক্রয়ের মেমো ছাড়াই জমা রাখেন সোনালী ব্যাংকের বৈদেশিক বানিজ্য শাখার ব্যবস্থাপক মো. আজিজুল হক রাসেল।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক মো. আজিজুল হক রাসেল বলেন,ডলার পাউন্ড ক্রয় বিক্রয় করতে হলে পাসপোট দেখাতে হবে।আজিজুল হক রাসেল কে প্রশ্ন করা হয় যে,
প্রতিদিন সৈয়দ মানি এক্সচেঞ্জের ৬ শত থেকে ৭ শত ডলার পাউন্ড পাসপোর্ট ছাড়া আপনার ব্যাংকে জমা রাখছেন আপনার বৈদেশিক বানিজ্য শাখায় এটা কি অবৈধ না। এমন প্রশ্নে কোন উত্তর দেয় নি আজিজুল হক রাসেল।

এদিকে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম এর স্বারক্ষিত  ২৯/১১/২০২৩ তারিখে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। যেখানে উপ- মহাব্যাবস্থাপক সোনালী ব্যাংক মৌলভীবাজার কে উল্লেখ করে বলা হয় সোনালী ব্যাংক লি: মৌলভীবাজার এর উপ- মহাব্যাবস্থাপক কে একাধিক বৈদেশিক  বানিজ্য শাখা খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিদ্যমান শাখা/ শাখাসমূহে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রধান,সকল লাইসেন্স বিহীন রিক্রুটিং এজেন্ট,ট্রাভেল এজেন্সি ও মানি এক্সজেঞ্জারসমূহ এর উদ্দেশ্যে উল্লেখ রয়েছে,যে সকল রিক্রুটিং এজেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি ও মানি এক্সজেঞ্জারদের কোনো লাইসেন্স নেই,তারা কত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স নিতে পারবেন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মালিক পক্ষ সম্ভাব্য ১ বছর সময়ের কথা উল্লেখ করেন। জেলা প্রশাসক দ্রুত সময়ে লাইসেন্স গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে সৈয়দ ফয়ছল আহমদ মানি লন্ডারিং করে বিদেশে টাকা পাচারকারি ও অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার সাথে জরিত বলে সূত্র বলছে। সূত্র আরও বলছে, আমেরিকায় টাকা পাচার করে কিনেছে বাড়ি।

সরকারের তালিকাভূক্ত অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ী ও বিদেশে টাকা পাচারকারিরা রাতারাতি হয়ে উঠেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। সরকার খুব শীঘ্রই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে এমটাই আশা করছেন জেলা বাসী।

মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত একটি মাত্র ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ তাহলো মৌলভীবাজার শহরের বেরীর পাড় দর্জির মহল এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top