প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ জালিয়াতি- পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও ছাত্রলীগসহ শতাধিক গ্রেপ্তার
অপরাধ প্রতিবেদকঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ায় এবং অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদের মধ্যে পরীক্ষার্থী, শিক্ষক এবং ছাত্রলীগের সাবেক অনেক নেতাও রয়েছেন।
শুক্রবার প্রথম পর্বে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮টি জেলার ৫৩৫টি কেন্দ্রে এ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রথম ধাপের রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট বিভাগের ১৮টি জেলার ৫৩৫টি কেন্দ্রে এ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রথম ধাপের রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলায় এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
ভোলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারের দায়ে ২২জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ২৭জনকে পরীক্ষা শুরুতেই ডিভাইস পাওয়ায় বহিষ্কার করেন বিভিন্ন কেন্দ্রের দায়িত্বর শিক্ষকরা।
এই পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামে ৭৬ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু মোবাইল ফোন ও ডিভাইসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিটু এক্স ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের উত্তর প্রদানের চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রস্তুতির সময় পরীক্ষার আগের রাতে ও সকালে রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ তিনটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ পরীক্ষার্থী এবং ডিভাইস জালিয়াতি সিন্ডিকেটের সদস্যরা আছেন। আটক ১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে আট জনই নারী। পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে সকলকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি ডিভাইস, ৮০টি ফোন ও প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, গাইবান্ধা সদরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টার কার্ডের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতি করার সময় জালিয়াত চক্রের পাঁচ জন মূলহোতা ও ৩০ পরীক্ষার্থীসহ মোট ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩। তাদের কাছ থেকে ২২ টি ইলেকট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত মাস্টার কার্ড, ১৯ টি ব্লুটুথ ডিভাইস ও ১৬টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আটকের ফলে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি চক্রটি।
সৈয়দপুর থানা পুলিশ জানায়, সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, কয়া গোলাহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে তিন পরীক্ষার্থীকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ফোনসহ আটক করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। আটক পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
কুড়িগ্রামে প্রক্সি ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতি করে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে ৯ পরিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এছাড়াও তিন জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
লালমনিরহাটেও পরীক্ষা চলাকালে কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ১৩ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
দিনাজপুরে প্রক্সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অভিযোগে ১৮ জন বহিরাগতকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে অসদুপায় অবলম্বনের কারণে বহিষ্কার করা হয়। একই অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ে সাত জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।