পাঁচ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা, ঈদের পরে আন্দোলন
বিশেষ প্রতিবেদকঃ গত রবিবার পাঁচ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন কর্মচারী সংগঠনগুলোর নেতারা।
কর্মচারী সংগঠনগুলোর নেতাদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কতটা বৃদ্ধি করা যায় তা বিবেচনা করবেন। কিন্তু রোববার ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির ঘোষণায় আমরা হতাশ হয়েছি। ঈদুল আজহার পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাব। প্রয়োজনে দাবি আদায়ে আন্দোলনে যাব।
বাংলাদেশ সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট একজন সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছি। সরকার ৮ বছর পর আমাদের ৫ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছে। কিন্তু বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি বলেন, আট হাজার ২০০ টাকা মূল বেতন যে কর্মচারী চাকরি করেন, তার বেতন বেড়েছে ৫শ টাকা। অথচ গ্যাস ও ঘর ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। ৮ বছর পর বেতন বাড়ানো হয়েছে। প্রতি বছর এক শতাংশ করে হলেও কম করে ৮ শতাংশ বাড়ার কথা।
তিনি আরও বলেন, যাদের মূল বেতন বেশি, তাদের বেতন আরও বেড়েছে। কিন্তু যাদের মূল বেতন কম তাদের বেতন তো সেই হারে বাড়েনি। সরকারি হিসাবেই যেখানে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ। সেখানে ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির কোনো মানে হয় না। আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। ঈদুল আজহার পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের বক্তব্য সরকারের কাছে তুলে ধরব। দাবি আদায়ে সক্রিয় হব।
সরকারি কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি এক ধরনের তামাশা। এতে আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। সরকার যদি মুজিববর্ষে কিংবা স্বাধীনতার রজতজয়ন্ত্রী উপলক্ষ্যে কোনো আর্থিক সুবিধা ঘোষণা করত, সেটি হতো প্রণোদনা।
কিন্তু ৫ শতাংশ বেতন বাড়িয়ে সরকার কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। নির্বাচনি প্রচারের জন্য এটা একটা কৌশল মাত্র। এখন সরকার বলবে আমরা কর্মচারীর বেতন ৫ শতাংশ বাড়িয়েছি। কিন্তু আমরা প্রণোদনা চাই না। আমরা বাঁচতে চাই। বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন বাড়াতে হবে। আমাদের হাত-পা বাঁধা, প্রতিবাদ করতে পারি না। তারপরও কর্মচারীদের দাবি আদায়ে যে সব সংগঠন কাজ করছে, তাদের সঙ্গে নিয়ে আলাপ-আলোচনার করে দাবি আদায়ে পদক্ষেপ নেব।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, জুন ক্লোজিং এবং ঈদুল আজহার ছুটির কারণে আমরা কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারিনি। ঈদুল আজহার পর কালেক্টরিয়েট কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি এবং বাংলাদেশ বিভাগীয় কমিশনার কর্মকর্তা কর্মচারী সমিতি মিটিং করে সরকারের কাছে যৌথভাবে দাবি পেশ করব। এরপর দাবি আদায়ে সচেষ্ট হব।
এদিকে ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনের মহাসচিব আবু আলম মো. শহিদ খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের অবসরপ্রাপ্ত প্রায় ৮০ ভাগ কর্মচারী নিম্ন শ্রেণির। তারা মারাত্বক আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে।
একই সাথে ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির সুবিধা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আরও সংবাদ পড়ুন।
সরকারি কর্মকর্তারাই মানছে না সরকারি আইন;অনৈতিক সুবিধা নিতে একস্থান বহুবছর
আরও সংবাদ পড়ুন।
আরও সংবাদ পড়ুন।
সরকারি চাকুরীজীবিদের আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক; রিটার্ন জমা না দিলে বেতন বন্ধ