সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক
বিশেষ প্রতিবেদকঃ মাে: গিয়াস উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ-৪ এর নামে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার স্মারক নং-২৪৮৬৯, তারিখ ০২/১১/২০২০ খ্রি: মূলে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারী করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে তিনি গত ২৩/১২/২০২০ খ্রি: তারিখে তার প্রতিনিধির মাধ্যমে পরিচালক (বি: অনু ও তদন্ত-১), দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
অনুসন্ধান/যাচাইকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুযায়ী আসামী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এর নামে অর্জিত/প্রাপ্ত স্থাবর সম্পদের মূল্য ১৫,০৭,১৫,৭৭৯/- টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৫,৮৮,৭০,৩১৮/- টাকাসহ মােট সম্পদের মূল্য (১৫,০৭,১৫,৭৭৯ + ৫,৮৮,৭০,৩১৮/-) = ২০,৯৫,৮৬,০৯৭/- টাকা। ২০০৮-২০০৯ করবর্ষ হতে ২০২১-২০২২ করবর্ষে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ১,২৫,৯৬,৩১০/- টাকা। তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ১,২৫,৯৬,৩১০/- টাকাসহ অর্জিত সম্পদে ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ (১৬,১৯,৯৩,৭৩৩ + ১,২৫,৯৬,৩১০) =১৭,৪৫,৯০,০৪৩/- টাকা। তার পারিবারিক ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ ব্যয়িত ১৭,৪৫,৯০,০৪৩/- টাকার বিপরীতে আয়ের উৎসসমুহ হলােঃ (১) ২০০৮-২০০৯ করবর্ষের পূর্বের সঞ্চয়/সম্পদ (২০০৭-২০০৮ করবর্ষে সম্পদ বিবরণী দাখিল, মামলা রুজু ও বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি) ৬,৮১,২২,৮৫৬/- টাকাকে আয় হিসেবে বিবেচনা করা হলাে, (২) ২০০৮-২০০৯ করবর্ষ হতে ২০২১-২০২২ করবর্ষে গৃহ সম্পত্তি হতে মােট আয় ২,১৮,৬৯,৪৫০/- টাকা (সরজমিন অনুসন্ধানে তার মালিকানাধীন দোকান ভাড়া পাওয়ার বিষয়টি সঠিক বলে প্রতীয়মাণ হয়), (৩) ২০১৩-২০১৪
করবর্ষে পিতার নিকট হতে হেবা মূলে প্রাপ্ত ১১ শতাংশ জমিসহ দালানের মূল্য ৭,০০,০০,০০০/-টাকা, (৪) ২০১৯-২০২০ করবর্ষ হতে ২০২১-২০২২ করবর্ষে মুক্তিযােদ্ধা ভাতা হিসেবে প্রাপ্তি ৪,৩২,০০০/- টাকা, (৫) ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১ করবর্ষে। উৎসব ভাতা প্রাপ্তি ৪৪,০০০/- টাকা, (৬) ২০২১-২০২২ করবর্ষে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ সনের ১৯ এএএএএএ ধারায় প্রদর্শিত আয় ১,৪১,৮৬,৯৩১/- টাকা এবং (৭) ২০২১-২০২২ করবর্ষে দোকান বিক্রয় হতে আয় ২২,২৯,৫০০/- টাকাসহ দায় বাদে মােট
আয় ১৭,৬৮,৮৪,৭৩৭/- টাকা।
অনুসন্ধানকালে মাে: গিয়াসউদ্দিন এর আয়কর নথি অনুযায়ী দেখা যায় যে, ২০১৭-২০১৮ করবর্ষ পর্যন্ত তার নামীয় কাসসাফ শপিং সেন্টার-০১ নির্মাণ ব্যয় প্রদর্শন করেন ৩,৭২,৩৬,৬০০/- টাকা, ২০১৮-২০১৯ করবর্ষে উক্ত মার্কেট নির্মানে বিনিয়ােগ করেন ৬০,০০,০০/- টাকা, ২০১৯-২০২০ করবর্ষে উক্ত মার্কেট নির্মানে বিনিয়ােগ করেন ২,৪৫,৪১,৬৩২/- টাকা এবং
২০২০-২০২১ করবর্ষে উক্ত মার্কেট নির্মানে কোন বিনিয়ােগ প্রদর্শন করেননি। তবে ২০২১-২০২২ করবর্ষে উক্ত মার্কেটের ৮০২ বর্গমিটার নির্মানে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ সনের ১৯ এএএএএ ধারায় ১,৪১,৮৬,৯৩১/- টাকা ভবন নির্মানে ব্যয় করেছেন মর্মে দেখা যায়। যার আয়ের উৎস প্রদর্শন করতে সক্ষম হননি বিধায় গ্রহণযােগ্য নয়। কারণ “অর্থ আইন ২০২০ (সংশােধিত ২০২১)
অনুযায়ী আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ সনের ১৯ এএএএএ ধারায় রিটার্ণ অথবা সংশােধিত রিটার্ন দাখিলের তারিখে অথবা তার পূর্বে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর অধীন করফাঁকির অভিযােগে কোনাে কার্যধারা বা অন্যকোনাে আইনের অধীন আর্থিক বিষয়ে কোনাে কার্যধারা চালু হলে এ ধারার বিধান প্রযােজ্য হবে না। ফলে তার কর্তৃক উক্ত ধারায় প্রদর্শিত ভবন নির্মানে ব্যয়িত ১,৪১,৮৬,৯৩১/- টাকা তার কর্তৃক অর্জিত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তা নিজ ভােগ-দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযােগ্য অপরাধ করেছেন বিধায় তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।