হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তারকে পেটালেন উপজেলা যুবলীগ সভাপতি
অপরাধ প্রতিবেদকঃ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বরত ডাক্তারকে লাঞ্ছিত ও মারধর করেছেন যুবলীগের সভাপতি মাহববুল আলম মনি ও তার লোকজন। মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহববুল আলম মনিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে মুক্তাগাছা শহর থেকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম মনিকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন তার আরও ৪ সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- জাহিদুল ইসলাম জুয়েল, রানা দে, মো. কামরুজ্জান ও রাকিবুল হোসেন শরীফ।
এ ঘটনায় বুধবার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেছেন হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ অন্যরা। দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলনে ডেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান মুক্তাগাছা উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এ সময় মৌখিক বিবৃতি দেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. উৎপল সরকার। এদিকে এ ঘটনায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ময়মনসিংহ শাখাও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম মনি হাসপাতালে কর্মরত ইমার্জেন্সি বিভাগের ডাক্তার এএইচএম সালেকিন মামুনকে হাসপাতালের হটলাইন মোবাইল নাম্বারে ফোন করে বলেন, তার মায়ের করোনাভাইরাসের নমুনা টেস্ট করাতে হবে। এজন্য তার বাসায় যেন কাউকে পাঠানো হয়।
এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এইচএম সালেকিন মামুন তাকে জানান, আপাতত বাসা থেকে স্যাম্পল আনার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তার মাকে যেন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ কথা শুনে মোবাইল ফোন কেটে দিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে ৭-৮ জনের সহযোগীকে নিয়ে ইমার্জেন্সি বিভাগে যান মাহবুবুল আলম মনি। পরে দরজা বন্ধ করে ডাক্তারকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালসহ তাকে মারধর করা হয়। পরে হাসপাতালের কর্মরত স্টাফরা হামলাকারীদের কবল থেকে ডাক্তারকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় ওই দিনই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম মনিসহ ৭-৮ জনের নামে মুক্তাগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন ডা. এএইচএম সালেকীন মামুন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বলেন, ডাক্তারকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় যুবলীগ সভাপতি মাহবুবুল আলম মনিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গ্রেফতারকৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এতে আর কেউ যেন এসব ঘটনায় জড়াতে না পারে।