সাহেদের জামিন আবেদন খারিজ
আদালত প্রতিবেদকঃ রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিমের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার (২৪ মে) তার জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকার্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সাহেদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
বহুমুখী প্রতারক মাফিয়া সাহেদ করিমের করোনাকালীন রিজেন্ট হাসপাতালের অভিনব প্রতারণার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর গত ৭ জুলাই অভিযান চালায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর সাহেদ পলাতক হয়ে যায়। অবশেষে ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র্যাব।
ইতোমধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র মামলায় সাহেদের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, সিলেট ও সাতক্ষীরায় একাধিক মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় হাজিরা দিতে তাকে প্রায়ই ঐসব আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে কয়েদির পোশাক পরতে হয়েছে।
কারা সূত্রে জানা যায়, সাধারণ সেলের একটি কক্ষে সাহেদকে একাই রাখা হয়েছে। যেন অন্য কোনো বন্দির সঙ্গে দেখা বা আলাপ-আলোচনা না করতে পারে, সেজন্য কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। অন্য সাধারণ কয়েদির মতো তার জন্য সকালের নাস্তা গুড়, হালুয়া ও রুটি দেওয়া হয়। স্বাভাবিক নিয়মে দুপুরে মাছ ও রাতে মাংস বরাদ্দ করা হয়।
কারা সেলের মধ্যে একা একাই কখনো গান গেয়ে ওঠেন সাহেদ। সেলের লোহার রড ধরে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ছোট্ট সেলের মধ্যে তার সম্বল একটা কম্বল, প্লেট ও একটি বাটি। তবে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে একটি ছোট বালিশ তিনি চেয়ে নিয়েছেন। এই নিয়ে তার কারাবন্দি জীবন কাটছে।
করোনার চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে ২৫ আগস্ট তার বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। সার্টিফিকেট জাল করা সাহেদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। ১০ বছর আগের একটি মামলায় ঢাকার আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়। একই সঙ্গে তাকে ৫৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছিলেন। সেই মামলায় সাহেদ কখনোই গ্রেফতার হননি। আরেকটি মামলায় ২০০৯ সালে সাহেদ গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। পরে জামিনে ছাড়া পান। বর্তমানে সাহেদ কারান্তরীণ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি মামলা দায়ের করছেন।