শোভন – রাব্বানীর ভাগ্য করোনায় আটকে আছে
বিশেষ রিপোর্টঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে উঠা নানা অভিযোগ তদন্তের ২০ মাস কেটে গেলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো ফলাফল হয়নি।
নানা অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে থাকা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, করোনার কারণে তদন্ত কাজ শেষ করতে পারেননি তিনি।
গত ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্যহন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। যদিও তাদের অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন সময় তারা বলেছেন, তারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
গনমধ্যমের সাথে কথা বলেন, গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, আমরা বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি এবং হচ্ছি। পরিস্থিতি তৈরি করে আমাদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আমাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
রাব্বানীর অভিযোগ করেন, যারা অন্যায় করলেন তাদের কিছু হলো না কিন্তু আমরা অন্যায়ের শিকার হলাম। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগ একটা বলয়ের কাছে আটকে ছিলো। যে বলয়ে রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও সাংবাদিক ছিলেন। এই সিন্ডিকেট ভেঙে যখন আমাদের নিয়ে নেত্রী কমিটি করলেন তখন সেই বলয়ের অনেকেরই আঘাত লেগেছিলো। তারাই আসলে এই ঘটনাটা ঘটিয়েছেন। তারা বারবার নেত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। তাদের কবজায় কমিটি নেওয়ার জন্যই তারা সব সময় ওঁত পেতে ছিলেন।
রাব্বানীর মতে, ছাত্রলীগ থেকে শুধু আমাদের বাদ দেওয়া হয়নি পুরো ছাত্রলীগকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে এবং কলঙ্ক মাখানো হয়েছে। তাই ছাত্রলীগের ইমেজ রক্ষায় আমাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমি যদি সত্যিই অন্যায় করে থাকি সেটা প্রমাণ করে আমাকে জেলে দেন, নাহলে আমাকে দায়মুক্তি দেন। নেত্রীর যেকোনো সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নিবো, তিনি যেটা ভালো মনে করবেন সেটাই হবে কিন্তু আমরা দায়মুক্তি চাই। নেত্রীর মনে কষ্ট দিয়ে আমরা ছাত্রলীগ করতে চাই না।’
তিনি বলেন, প্রফেসর আলমগীর স্যারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটা আলোর মুখ দেখেনি। আমরা উনাকে যথেষ্ট তথ্য সরবরাহ করলেও তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
তদন্ত তাদের পক্ষে আসলে আবারও আওয়ামী লীগের ছায়াতলে আসবেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে রাব্বানী বলেন, আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুতি হবো না। সেই আদর্শ নিয়েই জননেত্রী শেখ হাসিনার ছায়াতলেই থাকতে চাই। আমি এমপি/মন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখি না। আমি বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে চাই। শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে থাকা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সঙ্গে গনমাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তদন্তের কাজ শুরু করেছিলাম, তবে সেটা খুব একটা সামনের দিকে এগুতে পারিনি। কারণ তার কিছুদিন পরই করোনা মহামারি শুরু হয়ে যায়। এ জন্য আমি কারো সঙ্গে বসে কথা বলতে পারেনি। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই এ ব্যাপারে আমি কাজ শুরু করবো।
২০১৮ সালে ১ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে দুই বছরের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেই কমিটি সমালোচনার মুখে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শোভন ও রাব্বানী।