হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া; থাকবেন দু’চার দিন
বিশেষ রিপোর্টঃ করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাত সাড়ে ১২ টায় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো। কোন জটিলতা নেই। তবে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। এ কারণে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে তাকে কয়েকদিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ তার আগে রাত ১০টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান তিনি।
রাত ১২টা পর্যন্ত সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাম, ইকো-ইসিজিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয় তার। নানা পরীক্ষার সুবিধার্থে রাতে তাকে ভর্তি করা হয়। তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে সাত তলায় ৭২০৩ রুমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিভিন্ন পরীক্ষার সময় বেগম জিয়ার সঙ্গে ছিলেন মেডিক্যাল বোর্ডের তিন সদস্য অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং ডা.আব্দুল্লাহ আল মামুন। হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাত পৌনে ১ টায় হাসপাতাল গেইটে অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বেগম জিয়ার করোনার আজ ১৯ দিন হলো। কয়েকটি টেস্ট হয়েছে। আজ দিনে আরেও কিছু টেস্ট হবে। এ কারণে অস্থায়ীভাবে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। কারণ বার বার হাসপাতালে আসা যাওয়া উনার জন্য কষ্টকর। টেস্টে যতটুকু দেখা গেছে তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আমরা আশা করছি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মেডিক্যাল বোর্ড ম্যাডামের কয়েকটি পরীক্ষার জন্য বলেছে। সেজন্যই তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ম্যাডাম করোনা পজিটিভ হলেও তার কোনো উপসর্গ নেই। তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ভালো আছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। এরপর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানান, সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ১৬ দিন পর বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনার দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্টও ‘পজিটিভ’ আসে।
গত ২৪ এপ্রিল রাত ১টার দিকে গণমাধ্যমকে বেগম জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী জানান, খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্টও ‘পজিটিভ’ এসেছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। ফুসফুসে কোনও জটিলতা নেই। আগামী ৫-৬ দিন পর খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফায় কোভিড টেস্টের ফলাফল ‘নেগেটিভ’ আসবে এবং তিনি করোনামুক্ত হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ডা. এফ এম সিদ্দিকী।