শামসুর রাহমানের কবিতা স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের সাহস ও শক্তি জুগিয়েছে- কে এম খালিদ
সাগর চৌধুরীঃ সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, শামসুর রাহমানের কবিতায় সংহত হয়ে আছে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্তর্গত ধারা, তাঁর কবিতায় শব্দবন্দি হয়ে আছে ১৯৫০ পরবর্তী অর্ধ-শতাব্দীরও অধিককালের বাংলাদেশের রূপ, স্বাধীনতা অর্জন ও বাঙালির অগ্রযাত্রা। তিনি স্বাধীনতার কবি। বিংশ শতাব্দীর তিরিশ দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধানতম কবি পুরুষ। তাঁর কবিতাসমূহ বিশেষ করে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন রচিত ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ কবিতা দুইটি স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের সাহস ও শক্তি জুগিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার কালজয়ী কবি শামসুর রাহমানের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, শামসুর রাহমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী কবি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার যে লড়াই করে যাচ্ছে, সে লড়াইয়ে শামসুর রাহমানের কবিতা আমাদের প্রাণিত করে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও শামসুর রাহমানের কবিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শামসুর রাহমান ১৯৮৭ সালে এরশাদের স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে দৈনিক বাংলার প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তাছাড়া ১৯৮৭ সাল পরবর্তী চার বছরে তিনি চারটি কবিতা লেখেন: প্রথম বছরে ‘শৃঙ্খল মুক্তির কবিতা’, দ্বিতীয় বছরে ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কবিতা’, তৃতীয় বছরে ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা’ এবং চতুর্থ বছরে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কবিতা’ লেখেন। ১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর লেখেন ‘গণতন্ত্রের পক্ষে কবিতা’। বস্তুত, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও জনমানুষের প্রতি অসীম দরদ তাঁর চেতনায় প্রবাহিত ছিল।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ‘শামসুর রাহমানের পঙক্তিমালায় স্বদেশের মুখ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।
প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি।